মোবাইল Virtual RAM কি | স্মার্টফোন কেনার আগে জানা প্রয়োজন
স্মার্টফোনে ভার্চুয়াল র্যাম প্রযুক্তি ইদানীং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কোম্পানিভেদে এক্সটেন্ডেড র্যাম, মেমোরি ফিউশন টেকনোলজি, ডায়নামিক র্যাম, র্যাপিড মেমোরিসহ বিভিন্ন নামে এই প্রযুক্তির দেখা মিলছে, যার আইডিয়া হলো- স্টোরেজের একটি অংশকে র্যাম হিসেবে ব্যবহার করা।
ভার্চুয়াল র্যাম হচ্ছে সফটওয়্যার প্যাকেজ, যা যখন আপনি কোন প্রোগ্রাম চালাতেন তখন ব্যবহৃত হয়।
এটি কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারের সাথে এবং প্রয়োগক্রমের মূল্য বাড়ানোর জন্য প্রয়োয়্জনীয় হল যদি আপনার কম্পিউটারের সাধারণ র্যামের মেমরি গুরুত্বপূর্ণভাবে কম থাকে। ভার্চুয়াল র্যাম যেমন একটি ফাইল হয় যেখানে প্রয়োগক্রমের জন্য রাখা হয়।
যদি আপনি অনেক আগে থেকে অনলাইন ব্যবহার করে থাকেন, স্মার্টফোনের র্যাম বাড়িয়ে নেয়া- এরকম টিউটোরিয়াল হয়ত চোখে পড়ে থাকতে পারে। তখনকার সময়ে এটা খুব সহজ প্রসেস ছিলো না, এজন্য সাধারণত স্মার্টফোনকে রুট করা প্রয়োজন হত। এখন কোম্পানিগুলো বিল্ট-ইন ফিচার হিসেবে ভার্চুয়াল র্যাম প্রদান করছে, জাস্ট একটা টগলেই চালু করা যায়।
ভার্চুয়াল রাম, রিয়েল লাইফে এটা কতটুকু কাজের?
ভার্চুয়াল রাম এর কাজ হলো সিস্টেমে অধিক র্যাম উপলব্ধ করা যা সিস্টেমের দক্ষতা বা স্পষ্টতা বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। তবে ভার্চুয়াল রাম যেমন সম্পূর্ণ হার্ডওয়্যার র্যাম না তেমনি সমস্ত কাজের জন্যই ব্যবহার করা যায়। যেমন কমপ্রেস ফাইল করার জন্য, অ্যাপ প্রস্তুত করার জন্য, ফোনে ভিডিও দেখার জন্য ইত্যাদি এলগোরিদমগুলি ব্যবহার করা হলে ভার্চুয়াল রাম খুব সহায়।
Virtual Ram কিভাবে কাজ করে?
ভার্চুয়াল র্যাম নিজেকে নথিভূক্ত করে এবং মোবাইল রেজিস্ট্রি ব্যবহার করে এটি আপনার মোবাইল হার্ডওয়্যারের সাথে একত্র করে। এটি একটি সফটওয়্যার প্যাকেজ যা স্মার্টফোন, কম্পিউটার এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসে ব্যবহার করা হয়। কোন প্রোগ্রাম ব্যবহার করার সময় যদি আপনার মোবাইল রেম মেমরি স্মার্টফোনের চেয়ে স্মাল হয়, তবে সিস্টেম ভার্চুয়াল র্যাম ব্যবহার করে হার্ডওয়্যারের মতো চলতে থাকে ।
যদি আপনি বুঝেশুনে একটি স্মার্টফোন কিনতে চান, তাহলে ভার্চুয়াল মেমোরি নিয়ে আপনার একটুখানি জেনে রাখা প্রয়োজন। কেননা যদি আপনি না জানেন, হয়ত কেউ কেউ আপনাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করতে দ্বিধা করবে না।
এই লেখার মূল উদ্দেশ্য হলো শুধু ভার্চুয়াল র্যামের ধারণা বুঝতে সাহায্য করা- একারণে টেকনিকাল আলোচনাগুলো খুব কম থাকবে। ইচ্ছা আছে মেমোরি নিয়ে সহজ ভাষায় ডিটেইলড আইডিয়া সহ একটি আর্টিকেল লেখার, তবে লেখালেখিত সময় দেয়াটা একটু কঠিন হয়ে উঠেছে আজকাল।
ভার্চুয়াল র্যাম হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের সমন্বিত একটি প্রযুক্তি। এর মূল কনসেপ্ট হলো স্টোরেজের একটি অংশকে র্যামের পরিবর্তে ব্যবহার করা, যাকে ভার্চুয়াল র্যাম বলা হচ্ছে। যখন ফিজিকাল র্যামে যথেষ্ট ফাঁকা জায়গা থাকে না, তখন সাময়িকভাবে তুলনামূলক কম প্রয়োজনীয় প্রসেসগুলো ভার্চুয়াল র্যামে স্থানান্তর (সয়াপিং) করা হবে। সিপিইউ এখান থেকে এড্রেস ট্রান্সলেশন প্রসেসের মাধ্যমে তথ্য এক্সেস করতে পারে।
মোবাইলে Virtual RAM কত প্রকারের হয়?
আপনার যদি ৪ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবি স্টোরেজের একটি ডিভাইস থাকে এবং ৪ জিবি স্টোরেজকে ভার্চুয়াল র্যাম হিসেবে সেট করা হয়, তাহলে ইফেক্টিভলি আপনার এখন ৪ জিবি দ্রুতগতির ফিজিকাল র্যাম, ৪ জিবি ধীরগতির ভার্চুয়াল র্যাম এবং ১২৪ জিবি স্টোরেজ থাকবে।
ভার্চুয়াল র্যাম ব্যবহার করে কিছু এডভান্টেজ পাওয়া সম্ভব, বিশেষ করে মাল্টিটাস্কিংয়ে ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ ম্যানেজমেন্টে কিছুটা এডভান্টেজ দিতে পারে। কিন্তু স্টোরেজ ডিভাইস ফিজিকাল র্যামের থেকে অনেক ধীরগতির হয়ে থাকে এবং এখানে সয়াপিং এবং ট্রান্সলেশনের জন্য ডিলে হতে পারে- সর্বোপরি এটা ফিজিকাল র্যামের রিপ্লেসমেন্ট না।
যেকারণে ৩ জিবি (ফিজিকাল) র্যামের ফোনে যখন অ্যান্ড্রয়েডের ফুল ভার্সন ব্যবহার হয়ে থাকে, ২ জিবি ফিজিকাল +২ জিবি ভার্চুয়াল র্যাম মিলে ৪ জিবি র্যামের ফোনে দেখা যায় অ্যান্ড্রয়েডের লাইটওয়েট গো ভার্সন। অর্থাৎ এই ভার্চুয়াল র্যামের ক্যাপাবিলিটি মোটেও আসল র্যামের মত নয়।
অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ভার্চুয়াল রাম কি?
অ্যান্ড্রয়েডের জন্য একটু নতুন হলেও লিনাক্স সিস্টেমে সয়াপ মেমোরি নামে ভার্চুয়ালি র্যামের ব্যবহার অনেক আগে থেকেই জনপ্রিয়। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলি, যখন আমি ২ জিবি র্যামের ডেস্কটপ ব্যবহার করতাম, এর সাথে আর ২ জিবি সয়াপ ব্যবহার করাটা পারফর্মেন্সে আসলেই লক্ষ্যণীয় পরিবর্তন আনতো, বিশেষ করে ল্যাগ ও হ্যাং হওয়ার প্রবণতা চোখে পড়ার মত কমে যেতো। অধিকতর র্যাম, যেমন ৮ জিবির ওপরে থাকলে এর প্রভাব ওভাবে দৃশ্যমান না। যত বেশি র্যাম থাকবে, ভার্চুয়াল র্যামের প্রভাব তত কম দৃশ্যমান হবে।
আরোও পড়ুন: মোবাইলে হঠাৎ করেই সিম সাপোর্ট না করছেনা? কি করবেন জেনে নিন!! sim not working
তো ভার্চুয়াল র্যাম একদমই কাজের না তা নয়, তবে মার্কেটিং গিমিক যে এর অন্যতম উদ্দেশ্য তা বলা বাহুল্য। এজন্য স্মার্টফোন কেনার ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল র্যামের পরিবর্তে ফিজিকাল র্যামই বিবেচনা করা উচিৎ। আর স্মার্টফোন কোম্পানিগুলোর প্রতি অনুরোধ থাকবে, ভার্চুয়াল র্যাম ফিচার প্রদান করা সমস্যা নয়, তবে এর মার্কেটিং যেন মিসলিডিং না হয়। ৪ জিবি র্যামের ফোনকে ৮ জিবি বলে যেন চালানোর চেষ্টা না করা হয়।
অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে ভার্চুয়াল রাম কিভাবে কাজ করে?
একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে ভার্চুয়াল র্যাম কাজ করার জন্য শর্তগুলি উল্লেখ করা উচিত, তবে সাধারণত অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম কম্পাইল করা হয়েছে ভার্চুয়াল র্যাম ব্যবহার করার জন্য। এছাড়াও মোবাইলে এক্সট্রা শ্রম বিশিষ্ট অ্যাপস ব্যবহার করে অতিরিক্ত রাম ব্যবহার করা যায় সেটি ভার্চুয়াল র্যাম নয়।