কম্পিউটারের প্রধান কাজ কি | Main Function of Computer?

কম্পিউটারের প্রধান কাজ কি | Main Function of Computer?

কম্পিউটারের প্রধান কাজ কি | TechSohag
কম্পিউটারের প্রধান কাজ কি | Main Function of Computer


কম্পিউটারের ভেতরের যন্ত্রাংশ

যেকোন ডিজিটেল কম্পিউটারের মধ্যে চারটি মৌলিক যন্ত্রাংশ থাকে। এগুলো হচ্ছে:- 

(ক) এ্যারিথমেটিক এবং লজিক ইউনিট বা অংক ও লজিক অংশ।

(খ) মেমরী ইউনিট বা স্মৃতি অংশ।

(গ) একটি কন্ট্রোল ইউনিট বা নিয়ন্ত্রণ অংশ।

(ঘ) একটি ইনপুট/আউটপুট ইউনিট ভেতরে প্রবেশকরণ/ বাহিরকরণ অংশ



(ক) এ্যারিথমেটিক এবং লজিক ইউনিট

এ ইউনিটকে সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিটও বলা হয়ে থাকে। আজকাল চিপ বলতে এ ইউনিটকেই বুঝায়। ইনটেল পেন্টিয়াম চিপ ও পাওয়ার পিসি চিপ সম্পর্কে নিশ্চয়ই পনারা জ্ঞাত আছেন। [এ লেখার সময় পিসি'র লেটেষ্ট চিপ ছিলো ইনটেল পেন্টিয়াম- ৪, অপরদিকে ম্যাক কম্পিউটারের লেটেষ্ট চিপের নাম ছিলো পাওয়ার পিসি জি ৫। এ্যারিথমেটিক এবং লজিক ইউনিট দিয়ে ডাটাকে নিয়ন্ত্রণ এবং যাবতীয় অংক কথার কাজ করা হয়।


এখানে কোটি কোটি রেজিষ্টার বা রেকর্ড থাকে। রেজিষ্টার হচ্ছে। কতকগুলো মেমরী যন্ত্রাংশ যেখানে, যে কোন বিশেষ মান জমা করা যায়। যেমন আমরা যদি দুটি নাম্বারকে যোগ করতে চাই তবে দুটি নাম্বারই প্রথমে এক টুকরো কাগজের মধ্যে লিখতে হবে, তারপর যোগ করে যোগফলটি আবার লিখে দিতে হবে।


রেজিস্টারের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর 

রেজিষ্টারের মধ্যেও এই কাগজে লিখার মতো নাম্বার অথবা যে কোন মান (ভেলু) লিখে রাখা হয়। এক একটি রেজিষ্টার হচ্ছে এক একটি মেমরী বা, যেখানে কোন বিশেষ কিছু জমা করে রাখা যায়। যেমন: Case, CD-ROM DVD-ROM CDRW DVD+RW, CPU Fan, CPU or processor, Case Fan,Keyboard, Mouse, Memory, Hard Drive, Modem


এ্যারিথমেটিক এবং লজিক ইউনিটের কাজ তাই অত্যন্ত সহজবোধ্য। একটা কম্পিউটার প্রোগ্রাম যেসকল ভেলুর উপর যেরূপ কার্য সমাধা করতে চাইবে, এ ইউনিট ঠিক তাই করবে।


যাবতীয় লজিক্যাল সমস্যাবলীর কতকগুলো ফাংশন বা বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে উপস্থাপন করা যায়। এগুলোর নাম হলো ফাংশন। কম্পিউটার এই লজিক-অংকের মাধ্যমে চলে।


বুলিয়ান বীজগণিত ও সাধারণ বীজগণিতের পার্থক্য

এধরনের গণিতকে বুলিয়ান বীজগণিত বলে। বুলিয়ান বীজগণিতে যে কোন সমস্যার দুটিমাত্র ফলাফল সম্ভব হতে পারে, হয় উহা সত্য না হয় মিথ্যা। একই সময় সত্য এবং মিথ্যা হতে পারে না। এ প্রসঙ্গে বুলিয়ান বীজগণিত সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা সম্ভবপর নয়, তবে কম্পিউটারে কিভাবে প্রসেস করে তার একটা ধারণা এখানে উপস্থাপন করলাম মাত্র।


একই সময়ে প্রসেস করা এবং সবকিছু জমা করে রাখা কিন্তু এ্যারিথমেটিক এবং লজিক ইউনিট দ্বারা স পর নয়। এর জন্য আলাদা আরও মেমরীর প্রয়োজন । 



(খ) মেমরী ইউনিট

কম্পিউটারে দুই ধরনের মেমরী ইউনিট থাকে, এদের একটা হলো প্রাথমিক ও অপরটি মাধ্যমিক ইউনিট। প্রাথমিক ইউনিটে জমাকৃত সবকিছু একটা প্রোগ্রাম চলাকালে ব্যবহৃত হয়। এটাকে রাম (রানডম একসেস মেমরী) বলা হয়।


মাধ্যমিক মেমরীর মধ্যে প্রসেস করা সবকিছু জমা করে রাখা হয়। আপনার কম্পিউটারে যে হার্ড ডিক্স আছে এটাই হচ্ছে মাধ্যমিক বা স্টোরেজ মেমরী। কম্পিউটার বন্ধ করে দিলে যাবতীয় রাম মেমরী বিলুপ্ত হয়ে যায় কিন্তু হার্ড ডিক্সে জমাকৃত মেমরী নষ্ট হয়। না। আজকাল বিভিন্ন উপায় উপকরণের মাধ্যমে প্রোগ্রাম ফাইল ও ডাটা জমা রাখার ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে।


এগুলোর মধ্যে সিডি রম (রিড অনলি মেমরী), সাড়ে তিন ইঞ্চি ফ্লপি ডিক্স, জিপ ও ঝাজ ড্রাইভ, পেন ড্রাইভ প্রভৃতি উল্লেখণ্ডেযাগ্য ।


(গ) কন্ট্রোল ইউনিট বা নিয়ন্ত্রণ অংশ

এ ইউনিটের মাধ্যমে ষ্টোর করা মেমরীকে প্রোগ্রামের কমাণ্ড ও নির্দেশনা অনুযায়ী, পরিচালনা করা হয়। অর্থাৎ এটির কাজ হলো ষ্টোর করা জিনিসপত্র প্রয়োজন অনুযায়ী কন্ট্রোল করে।


(ঘ) ইনপুট/আউটপুট ইউনিট

যে কোন কম্পিউটার পরিচালনায় ডাটা বা ইনফরমেশনকে কোন উপায়ে ভেতরে প্রবেশ করানো এবং প্রসেস শেষে ফলাফল বের করে আনার বিশেষ প্রয়োজন আছে। এ দুটি জরুরী কার্য সমাধা হয় ইনপুট/আউটপুট ইউনিটগুলো দ্বারা পুরণ।


আজকাল ইনপুট ইউনিট হিসেবে কিবোর্ড, মাইক্রোফোন, ডিজিট্যাল ক্যামেরা, মডেম, স্ক্যানার প্রভৃতি ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে আউটপুটের জন্য মনিটর, প্রিন্টার, স্পিকার, ইমেজসেটার প্রভৃতি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।


এ পর্যন্ত কম্পিউটারের ভেতর ও বাহিরের যন্ত্রাংশ বা হার্ডওয়ার সম্পর্কে আলোচনা হলো। এবার যে উপায়ে কম্পিউটারকে নিয়ন্ত্রণ, পরিচালনা এবং আপনি এটা দিয়ে যাকিছু করবেন তা কিভাবে করা হয়, সেদিকে দৃষ্টি দিচ্ছি।


সফটওয়্যার কাকে বলে

আপনি নিশ্চয়ই সফট্ওয়ারের কথা শুনে থাকবেন। বাংলাতে সফট্ওয়ারকে তরল-যন্ত্রাংশ বলা যায়। এটা সহজেই অনুমেয় যে, একটা কম্পিউটার এই সফট্ওয়ার ছাড়া চলে না। সফট্ওয়ার হচ্ছে একটা কোড-করা (কম্পিউটারের প্রতিটি যন্ত্রাংশের জন্য অর্থবোধক কিছু কোড), অনুজ্ঞেয় বা নির্দেশনাবলী।


আপনি এসব সফট্ওয়্যার বা প্রোগ্রাম সর্বদাই ব্যবহার করে যাচ্ছেন। যে মুহূর্তে আপনি একটা কম্পিউটার অন করবেন, তখন থেকেই সফট্ওয়্যারের কাজ আরম্ভ হবে।


অপারেটিং সিস্টেম ও প্রয়োজনভিত্তিক প্রোগ্রাম, এ দু'ধরনের সফট্ওয়্যার দ্বারা কম্পিউটার চলে।


অপারেটিং সিস্টেম কাকে বলে 

অনেক ধরনের অপারেটিং সিস্টেম আছে, তবে আজকাল দু ধরনের সিস্টেমই বেশী ব্যবহৃত হয়ে থাকে, আর এগুলো হলো পিসি এর জন্য মাইক্রোসফটের তৈরী উইনডোজ ৯৫/৯৭/৯৮ / 2000 ও আপেল মেকিনটশের তৈরী মেক অপারেটিং সিস্টেম। আপনার যদি পিসি থাকে তবে আপনাকে অবশ্যই, উইনডোজ সিস্টেমে চলে এ ধরনের প্রোগ্রাম ক্রয় করতে হবে।


আর মেকিনটশ কম্পিউটার হলে, মেক অপারেটিং সিস্টেমের সফট্ওয়্যার আনতে হবে। অবশ্য আজকাল একই প্রোগ্রাম দুটি সিস্টেমের জন্যেই পাওয়া যায়, অর্থাৎ সফট্ওয়্যার যারা সৃষ্টি করছেন, তারা দুটি সিস্টেমের জন্যেই করছেন। আপনি কোন সিস্টেম ব্যবহার করবেন তা একান্ত পনার ব্যক্তিগত ব্যাপার, তবে সাধারণতঃ মেক সিস্টেমকে সহজবোধ্য বলে ধারণা করা হয়।


কম্পিউটার সফটওয়্যার বা তরল অংশ

যে কোন প্রোগ্রামকে জমা করে রাখার জন্য, জবধফ ঙহষু গবসড়ৎ (জগুগ), বা শুধু পড়া যায়, এমন মেমরীর মধ্যে রাখা হয়ে থাকে। আপনার কম্পিউটারের ভেতর যে হার্ড ডিক্স আছে ওটা হলো জঙগ মেমরী। জগুগ মেমরীর আরোও দৃষ্টান্ত হলো, ঋষড়ঢ়ঢ় উরংপ, ইউ জড়স প্রভৃতি।


প্রোগ্রাম কি

যে কোন কম্পিউটার প্রোগ্রাম একজন প্রোগ্রামার দ্বারা বিশেষ কোন কার্য সমাধানের উদ্দেশ্যে লিখা হয়। প্রোগ্রাম লেখার অনেক ধরনের ভাষা আছে, যা ইংরেজী ভাষার মত এবং তা বুঝা সহজবোধ্য।


যে কোন একটা ভাষার মাধ্যমে প্রোগ্রাম লেখার পর এটাকে কম্পিউটারের ভাষায় রূপান্তরিত করতে হয়। অর্থাৎ প্রতিটি কমাণ্ড এবং অনুজ্ঞাকে (Instructions) ও ১- এ দুটি বাইনারি কোডে রূপান্তরিত করতে হবে। এ কাজ অবশ্য প্রোগ্রামারকে নিজে করতে হয় না, এর জন্য আলাদা আরেকটি বিশেষ প্রোগ্রাম আছে যেটির নাম হলো কমপাইলার (Compiler)।

প্রোগ্রাম কত প্রকার ও কি কি
প্রোগ্রাম কত প্রকার ও কি কি 

প্রোগ্রাম কত প্রকার ও কি কি 

দুই ধরনের প্রোগ্রাম করার ভাষা আছে। এগুলো হলো, মেশিন কোড থাকে। নিম্নস্তরের প্রোগ্রামও (Low Level Language) বলা হয় এবং উচ্চ স্তরের প্রোগ্রাম (High Level Language)। সাধারণতঃ বাইনারি কোডে প্রোগ্রাম লেখা হয় না


নিম্ন স্তরের ও উচ্চ স্তরের প্রোগ্রামকে কমপাইলার দিয়ে বাইনারি কোডে রূপান্তরিত করা হয়। আপনার কম্পিউটারে প্রতিনিয়ত ব্যবহৃত প্রোগ্রাম বা ওয়ার্ড প্রসেসারগুলো- যেমনঃ মাইক্রোসফ্‌ট ওয়ার্ড, ওয়ার্ড পারফেক্ট, ক্লারিস ওয়ার্কস, ফটোশপ, ইলোস্ট্রেটর, কুয়ার্ক এক্সপ্রেস প্রভৃতি সফট্ওয়্যার হচ্ছে এক একটা প্রোগ্রাম, যা প্রথমে হাই লেভেল প্রোগ্রাম করার ভাষায় (যেমন পাসকেল বা সি++) লিখে কমপাইলার দ্বারা বাইনারিতে বদলে দেওয়া হয়েছে


সুতরাং একটি কম্পিউটারের জন্য তা গ্রহণযোগ্য কোডে পরিণত হয়েছে। ইতোমধ্যে উল্লেখিত এক একটা প্রোগ্রামের মধ্যে হাজার হাজার লাইন প্রোগ্রামিং কোড আছে। একজন প্রোগ্রামারকে তাই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে কোড লিখতে হয়, কারণ সামান্যতম বেশ- কম হলেই সমগ্র প্রোগ্রাম অকেজো হয়ে যাবে। এতে প্রোগ্রামের মধ্যে বাগ (খারাপ প্রোগ্রাম) ঢুকে যেতে পারে।


প্রোগ্রাম করা তাই সহজ ব্যাপার নয়। ওয়ার্ড প্রসেসারের মত একটা জটিল কঠিন প্রোগ্রাম লিখতে এবং প্রকাশ করতে, তাই এক থেকে দু'বছর পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। কম্পিউটার সফট্ওয়্যারের মূল্যও তাই আজকাল বেশী হচ্ছে। বর্তমানে মাইক্রোসফটের মত পৃথিবী বিখ্যাত বৃহৎ কোম্পানী গড়ে উঠেছে শুধুমাত্র কম্পিউটার সফট্ওয়্যার সৃষ্টির উদ্দেশ্যে।


মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা ও মালিক বিল গেইট্স এখন পৃথিবীর মধ্যে সর্বাপেক্ষা ধনী ব্যক্তি হয়েছেন কম্পিউটার তৈরী করে নয়, সফট্ওয়্যার সৃষ্টি ও প্রকাশ বিকাশ করে। সফট্ওয়্যার ব্যবসা তাই এখন একটি মাল্টি-বিলিয়ন ডলার ব্যবসায়ে রূপান্তরিত হয়েছে।


ইন্টারনেট কি ব্যাখ্যা কর 

মাত্র কয়েক বৎসর পূর্বে বিশ্বজুড়ে ইনফরমেশন (তথ্যাদি) সহজে এবং কম খরচে বিনিময় করার উদ্দেশ্যে ইনটারনেট নামে একটি অভিনব ব্যবস্থা চালু হয়। খুব শীঘ্রই এটা জনপ্রিয় একটি শিক্ষা মাধ্যম ও তথ্য বিনিময় উপায় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ওঠে।


আজকাল আপনি ইনটারনেটের মাধ্যমে পৃথিবীর যে কোন স্থান থেকে যে কোন অন্যান্য একাধিক স্থানে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবেন। এই ইনটারনেট সত্যিই ইনফরমেশন টেকনলজীকে বিপ্লবে পরিণত করে দিয়েছে। কম্পিউটারের উপর এই পরিচ্ছেদের শেষভাগে এসে আমি এ আলোকপাত করবো। সর্বাধুনিক কম্পিউটার বিপ্লবের উপর ইনটারনেট একাধিক কম্পিউটার, যেগুলো টেলিফোনের মাধ্যমে নেটওয়ার্ক হিসেবে জড়িত করা হয়। 


এ নেটওয়ার্ক সময় বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত হতে সক্ষম। অর্থাৎ যেখানেই টেলিফোন লাইন থাকবে সেখানে একটি কম্পিউটার ইনটারনেটের নেটওয়ার্কের সাথে জড়িত করা সম্ভব। এমনকি ল্যান্ড লাইন না থাকলেও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সুদূর মফস্বলে থেকেও আপনি ইনটারনেটের সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন। তাহলে, অভিনব এই টেকনোলজি আসলে কি- একবার তলিয়ে দেখা যাক ।


ইন্টারনেট কি ধরনের নেটওয়ার্ক 

ইনটারনেট একাধিক কম্পিউটার, যেগুলো টেলিফোনের মাধ্যমে নেটওয়ার্ক হিসেবে জড়িত করা হয়। এ নেটওয়ার্ক সমগ্র বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত হতে সক্ষম। অর্থাৎ যেখানেই টেলিফোন লাইন থাকবে সেখানে একটি কম্পিউটার ইনটারনেটের নেটওয়ার্কের সাথে জড়িত করা সম্ভব।


এমনকি ল্যান্ড-লাইন না থাকলেও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সুদূর মফস্বলে থেকেও আপনি ইনটারনেটের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন। তাহলে, অভিনব এই টেকনোলজি আসলে কি- একবার তলিয়ে দেখা যাক।


যে মুহূর্তে আপনি আপনার নিজের কম্পিউটার ও টেলিফোনের (মডেম) মাধ্যমে ইনটারনেট খুলবেন, তখন আপনার কম্পিউটারও এই জালের অংশ হিসেবে হয়ে যাবে।


ইনটারনেটের মাধ্যমে যে কোন ধরনের ফাইল স্থানান্তরিত করা যায়। আপনি যদি আপনার কোন বন্ধুর নিকট কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে পৃথিবীর যে কোন স্থানে পত্রাদির মাধ্যমে যোগাযোগ করতে ইচ্ছা করেন তাহলে আপনি ইনটারনেটের ই মেইল (ইলেকট্রনিক মেইল) সার্ভিস ব্যবহার করতে পারেন। আপনার এ পত্র প্রথমতঃ একটি সুপারকম্পিউটার বা সার্ভারে জমা হয়ে থাকবে। যখনই আপনার বন্ধু ইনটারনেট খুলবেন তখনই সার্ভার থেকে আপনার বন্ধুর কম্পিউটারে লেখাটা পৌঁছে যাবে। 


ইনটারনেট একটি পৃথিবী- বিস্তৃত কম্পিউটার নেটওয়া

বস্তুত এই সুপারকম্পিউটার সার্ভারের মাধ্যমেই ইনটারনেটকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এ ধরনের বহু সার্ভার পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় স্থাপিত হয়েছে। এই অতিথি বা হট কম্পিউটারের মাধ্যমেই আপনি ইনটারনেটে জড়িত হতে পারবেন। 


ইনটারনেটে যোগ দিতে হলে কয়েকটি বিশেষ যন্ত্রপাতির প্রয়োজন। প্রথমতঃ আপনার একটা কম্পিউটার অবশ্যই থাকতে হবে। সেই সাথে কম্পিউটারের সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য একটি মডেম এর দরকার। আজকাল এই মডেম কম্পিউটারের বস্তুত এই সুপারকম্পিউটার সার্ভারের মাধ্যমেই ইনটারনেটকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

এ ধরনের বহু সার্ভার পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় স্থাপিত হয়েছে। এই অতিথি বা হট কম্পিউটারের মাধ্যমেই আপনি ইনটারনেটে জড়িত হতে পারবেন।


ইনটারনেটে যোগ দিতে হলে কয়েকটি বিশেষ যন্ত্রপাতির প্রয়োজন

প্রথমতঃ আপনার একটা কম্পিউটার অবশ্যই থাকতে হবে। সেই সাথে কম্পিউটারের সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য একটি মডেম এর দরকার। আজকাল এই মডেম কম্পিউটারের সাথেই এসে থাকে। তারপর ইনটারনেটে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য যে কোন একটি সার্ভিস প্রভাইডার বা ইনটারনেটে যোগসূত্র প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন ।


আজকাল ঢাকা, সিলেট, চিট্টগ্রামসহ বাংলাদেশেরও বিভিন্ন শহরে এসব সার্ভিস প্রভাইডার আছে। এসব প্রতিষ্ঠান মাসিক বা বাৎসরিক একটা নির্দিষ্ট ফি নিয়ে থাকে। সাধারণতঃ যতোক্ষণ আপনি ইনটারনেট খুলে রাখবেন ততক্ষণ লক্যাল রেইটে টেলিফোন খরচ পড়বে, তবে এ খরচটা তেমন বেশী নয়। এর কারণ হলো আপনি পৃথিবীর যে কোন স্থানের সাথে সংযোগ স্থাপন করে থাকলেও নক্যাল রেইটে টেলিফোন চার্জ হবে। গতি


আজকাল ইনটারনেট সার্ভিস বেশ সস্তা হয়েছে। লণ্ডন আমেরিকা ও ইউরোপে কোন কোন ক্ষেত্রে ইন্টারনেট প্রায় ফ্রি হয়ে গেছে। এসব সার্ভিস প্রভাইডাররা তাদের আয় মূলত বিজ্ঞাপন থেকে পেয়ে থাকে। এছাড়া টেলিফোন কোম্পানী থেকেও তারা একটি লভ্যাংশ পায় । পরনে কর নিয়া ইনটারনেট সত্যিই ইনফরমেশন টেকনোলজীকে সর্বসাধারণের নাগালের ভেতরে এনে দিয়েছে।


ইন্টারনেট সুবিধা অসুবিধা 

ইনটারনেট যদিও আমাদের জন্য অনেক সুফল বয়ে নিয়ে এসেছে সত্যি- কিন্তু এসাথে নতুন প্রজন্মের নৈতিক ও মানসিক উন্নত চরিত্রগঠনে বিরাট হুমকিস্বরূপ হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেছে।

অনিয়ন্ত্রিয় এই সর্বাধুনিক মিডিয়ায় অশ্লীলতা সহজেই ছড়িয়ে পড়ছে- যা যে কোন ব্যবহারকারীর নিকট অনায়াসেই প্রাপ্য। সুতরাং ইনটারনেটের এই নেগিটিভ দিকটি নিয়ে আমাদেরকে গভীরভাবে ভেবে শতর্কতার সঙ্গে অগ্রসর হতে হবে।


এ ব্যাপারে প্রথমখণ্ডের শেষের দিকে কিছু ব্যক্তিগত মন্তব্য প্রকাশ করেছি। সুতরাং এখানে অতিরিক্ত আর কিছু বলার নেই। এ কথাগুলো প্রয়োজনের তাগিদে ইনটারনেট ব্যবহারকারীদের জ্ঞাতার্থে ব্যক্ত করলাম।

টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি Tech Sohag
টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি

টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি

ইংরেজীতে টেলিকমিউনিকেশন শব্দটির অর্থ ব্যাপক। গ্রীক শব্দ টেলি- কে কমিউনিকেশন শব্দটির সঙ্গে যুক্ত করে এ শব্দটি সৃষ্ট। টেলি অর্থ দূরবর্তী স্থান বা শুধু দূরে। আর কমিউনিকেশন অর্থ যোগাযোগ।


সুতরাং গ্রীক ও বাংলা শব্দের সমন্বয়ে “টেলিযোগাযোগ' বলতে মূলতঃ কোন দূরবর্তী স্থানে সংবাদ বা মেসেজ প্রেরণকে বুঝায়। আধুনিক যুগে তাই রেডিও, টেলিভিশন, টেলিগ্রাফ, টেলিফোন, ই-মেইল, ফ্যাক্স, স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন, রাডার ইত্যাদি সবই হচ্ছে টেলিযোগাযোগের অন্তর্ভূক্ত।


এককথায় তথ্য প্রেরণের জন্য যেসব দ্রুতগতিসম্পন্ন এবং দূরত্বে পাঠানোর যোগ্যতাসম্পন্ন টেকনোলজি ব্যবহৃত হচ্ছে তা সবই হলো টেলিযোগাযোগ।


টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি বলতে কি বুঝায়

টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তির মূলে যে জিনিসটি সর্বক্ষেত্রেই কার্যকরী তাহলো তথ্যকে প্রথমে প্রযৌক্তিক উপায়ে এনার্জি বা উদ্যমে পরিণত করা।


সাধারণত তিনটি এনার্জিতে তথ্য রূপান্তর করা হয়। এগুলো হলো: ইলেকট্রিক এনার্জি, ইলেকট্রমেগন্যাটিক এনার্জি এবং আলো বা লাইট এনার্জি। এই এনার্জি সৃষ্ট হয় প্রথমে যেখান থেকে মেসেজ প্রেরণ করা হবে সেখানে।


তারপর এই এনার্জিকেই আবার রিসিভার বা তথ্যসংগ্রহ যন্ত্রের মাধ্যমে শব্দ, লিখিত ফাইল কিংবা ছবিতে রূপান্তরিত করা হয়, যাতে প্রাপক তা সহজে বুঝে নিতে পারে। অন্যান্য যোগাযোগের ক্ষেত্রে সংবাদটি কোন বিশেষ উপায়ে প্রথমে রেকর্ড করতে হয়- যেমন, মূদ্রণ, হাতের লেখা, ছবি, ডিস্ক, অডিও-ভিডিও ইত্যাদি উপায়ে।


কিন্তু টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে মিডিয়াম বা মাধ্যম হিসেবে এনার্জি ব্যবহৃত হয়। মাধ্যম হিসেবে এনার্জি ব্যবহারের মধ্যে বড় ধরণের সুবিধা আছে।


প্রথমতঃ এনার্জিকে পাঠাতে গিয়ে আমরা স্বভাবের মৌলিক শক্তি ব্যবহার করতে পারি যেমন, বৈদ্যুতিক চুম্বকীয় শক্তি (ইলেকট্রমেগন্যাটিজম)।


দ্বিতীয়তঃ এনার্জি প্রেরণ হবে অতিদ্রুত বাস্তবে আলোকের গতির সমপরিমাণ গতিতে। তৃতীয়তঃ এটা সহজ ও পরিষ্কার পদ্ধতি। এছাড়া নিষ্কলুষ এনার্জির মাধ্যমে একাধিক তথ্য আমরা একই সঙ্গে প্রেরণ করতে পারি যেমন, শব্দ, ছবি ও গ্রাফিক্স।


মৌলিক টেলিযোগাযোগ যন্ত্রপাতি 

চারটি মৌলিক বষণা সম্পাদিত হয়ে থাকে। এগুলো হলো: ১. ট্রান্সমিটার (প্রেরকযন্ত্র), ২. সিগন্যাল (তরঙ্গ), ৩. মিডিয়াম (মাধ্যম) ও ৪. রিসিভার (প্রাপকযন্ত্র) ।


প্রেরকযন্ত্র কোন মেসেজকে প্রথমে একটি এনার্জি কিংবা তরঙ্গে পরিণত করে। এই এনার্জি একটি মাধ্যম যেমন, রেডিও-অডিও কিংবা ধাতুর তৈরী তার দ্বারা প্রাপকযন্ত্রে প্রেরণ করা হয়। প্রাপকযন্ত্র এই এনার্জিকে আবার মূল মেসেজে পুনঃরূপান্তর করে। প্রাপকযন্ত্র থেকে প্রেরকযন্ত্রে সংবাদ পৌঁছতে কিছুটা এনার্জি বা তথ্য ক্ষয় হয়ে যেতে পারে এই ক্ষয় হওয়াকে বলে নইজ। এছাড়া প্রেরকযন্ত্র থেকে মেসেজ আবার প্রাপকযন্ত্রে ফিরে আসতে পারে এটাকে বলে, ফিডব্যাক।


টেলিযোগাযোগের মৌলিক পদ্ধতি এটাই। এবার একে একে এসব সিস্টেম নিয়ে আমরা আলোচনা করবো।


এনালগ সিগন্যাল বা তরঙ্গ কি

তরঙ্গ ইলেকট্রিক্যাল কিংবা ইলেকট্রমেগন্যাটিক হতে পারে। ১৮৩৭ সালে সর্বপ্রথম টেলিগ্রাফ সার্ভিস চালু হয়। বৃটিশ রেলওয়ে এই ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যাল দ্বারা যোগাযোগ সৃষ্টি করে। একটি ইলেকট্রিক্যাল সার্কেটে বিশেষ পদ্ধতিতে অন-অফ সুইচ দিয়ে টেলিগ্রাফ সিগন্যাল প্রেরণ করা হতো।


এরপর সাম্যুয়েল এফ. মোর্স নামক একব্যক্তি ডট-ডাশ [ফোটা ও লাইন] সিস্টেম আবিষ্কার করেন। এই কোডিং মূলত লিখিত অক্ষর এবং নাম্বারের জন্য ব্যবহৃত হতো। এটাকে বলে মোর্স কোড। আলেকজান্ড্রার গ্রাহাম বেল কর্তৃক ১৮৭৬-৭৭ সালে টেলিফোন আবিষ্কারের পূর্ব পর্যন্ত পান কারে Analog Signal


টেলিফোন মূলত একটি এ্যানালগ টেলিযোগাযোগ সিস্টেম। এটাকে এ্যানালগ বলার অর্থ হলো টেলিফোনের মাধ্যমে মূলত আপনার-আমার কথা থেকে সৃষ্ট শব্দতরঙ্গকে ইলেকট্রিক্যাল ওয়েভে পরিণত করা হয়।


অর্থাৎ মানুষের কথার শব্দতরঙ্গ ও ইলেকট্রিক্যাল তরঙ্গ একটা আরেকটার সঙ্গে এ্যানালোজাস সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ্যানালগ পদ্ধতিকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে, মডিউলেশন। এ্যানালগ পদ্ধতি থেকে ভিন্ন আরেকটি পদ্ধতি আছে যাকে বলে, ডিজিট্যাল কোডিং। ডিজিট্যাল মানে নাম্বার ব্যবহার। প্রতিটি তরঙ্গকে শূন্য (০) কিংবা এক (১)-এ পরিণত করে কোডিং করা হয়।



তার মাধ্যম ও তারবিহীন মাধ্যম ব্যাখ্যা কর

কোর্ডি করলে সিগন্যাল হয় উন্নতমানের ও কলুষমুক্ত। আপনি নিশ্চয়ই ডিজিট্যাল টেলিভিশন বা টেলিফোনের কথা শুনেছেন। ডিজিট্যাল সিগন্যাল নিয়ে আমরা একটু পরই আলোচনা করবো।


এ পর্যন্ত সিগন্যাল প্রেরণের ক্ষেত্রে আমরা সরাসরি যুক্ত ইলেকট্রিক্যাল সার্কেটের ব্যাপারে আলোচনা করেছি। অর্থাৎ সিগন্যালকে ধাতুর তৈরী তারের মাধ্যমে প্রেরণ করার পদ্ধতি। কিন্তু তামার কিংবা অন্য কোন ধরণের ধাতুর তৈরী তার ছাড়াও সিগন্যাল প্রেরণ করা হয়ে থাকে।


এই পদ্ধতিকে বলে রেডিও সিগন্যাল। তবে এটা মূলত একটি ইলোকট্রমেগন্যাটিক তরঙ্গ। স্বভাবের চার ফোর্সের একটি হচ্ছে এই এনার্জি বা তরঙ্গ। প্রাথমিক অবস্থায় এই তরঙ্গ ব্যবহারে এ্যানালগ সিস্টেমই চালু হয়েছিল। বিংশ শতাব্দির শুরুতে ভয়েস বা কথা এবং শব্দতরঙ্গকে ইলেকট্রমেগন্যাটিক সিগন্যালে পরিণত করে পাঠানো হতো। এই তরঙ্গকে বলে ক্যারিয়ার ওয়েভ বা মাধ্যম তরঙ্গ।


প্রাথমিক যুগে টেলিভিশন সিগন্যালও একই উপায়ে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে অত্যন্ত জটিল টেকনোলজির মাধ্যমে ছায়াছবিকে মাধ্যম তরঙ্গে (ক্যারিয়ার ওয়েভ) রূপান্তর করে পাঠিয়ে 316 / 542 পর্দায় সম্প্রচার করার ব্যবস্থা করা হতো।



ডিজিট্যাল সিগনাল

বিংশ শতাব্দির শেষের দিকে কম্পিউটারের ব্যাপক ব্যবহার থেকেই ডিজিট্যাল সিগন্যালের প্রতি মানুষ ঝুকে পড়ে। আগেই বলেছি এই সিগন্যাল মূলতঃ নাম্বার কোডিং।


এনালগ সিস্টেমে কোন তরঙ্গকে ওয়েভ পেটার্নে পরিণত করে মাধ্যম তরঙ্গে বদলানো হতো। অর্থাৎ শব্দ কিংবা কথাকে প্রথমে একটি ইলেকট্রমেগন্যাটিক তরঙ্গে রূপান্তর করে ক্যারিয়ার ওয়েভ বানিয়ে দূরে প্রেরণ করার সিস্টেম প্রচলিত ছিলো। এই সিস্টেম এখনও আছে তবে, ডিজিট্যাল সিগন্যাল এখন বেশি থেকে বেশি ফ্যাশনেবল হয়ে উঠছে।


ডিজিট্যাল সিগন্যাল যেহেতু যিরো কিংবা এক দ্বারা কোডিং হয় তাই এটা নইজ থেকে অনেকটা মুক্ত। এছাড়া আরও সুবিধা আছে।

যোগাযোগ স্যাটেলাইট techsohag
যোগাযোগ স্যাটেলাইট 

যোগাযোগ স্যাটেলাইট 

আজকাল টেলিফোন, টেলিভিশন ইত্যাদির সিগন্যাল পৃথিবীর যে কোন স্থানে সহজে ও একই সঙ্গে অসংখ্য সিগন্যাল প্রেরণ করা হচ্ছে মহাকাশে স্থাপিত কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে। এই বিশেষ কৃত্রিম উপগ্রহকে বলে কমিউনিকেশন বা যোগাযোগ স্যাটেলাইট। রিয়া


যোগাযোগ স্যাটেলাইট মূলত মহাকাশে জিও-স্টেশনারী কক্ষপথে ঘূর্ণমান থেকে কাজ করে। জিও-স্টেশনারী অরবিট বা কক্ষপথ হচ্ছে পৃথিবীর আহ্নিত গতির সমপরিমাণ গতিশীল কক্ষপথ।


মনে করুন, বাংলাদেশের উপরে যদি একটি যোগাযোগ স্যাটেলাইট স্থাপিত হয় তবে তা সর্বদাই মহাকাশে একই অবস্থানে অর্থাৎ বাংলাদেশের উপরেই থাকবে। এর কারণ হলো, বাংলাদেশের ভূখণ্ড যে গতিতে পৃথিবীর আহ্নিক গতির ফলে পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে ছুটে যাচ্ছে সেই একই গতিতে স্যাটেলাইটটিও পূর্ব দিকে প্রদক্ষিণ করছে। এই উপায়ে প্রদক্ষিণকেই বলে জিও- স্টেশনারী অর্থাৎ পৃথিবীর তুলনায় স্থির প্রদক্ষিণপথ।


প্রখ্যাত বৈজ্ঞানিক কাল্পনিক ঔপন্যাসিক আর্থার সি ক্লার্ক ১৯৪৫ সালে জিও- স্টেশনারী অরবিটের ধারণা জন্ম দেন। ওয়েলেস ওয়ার্লড নামক একটি ম্যাগাজিনে এ সম্পর্কে তার একটি লেখা প্রকাশিত হয়। উল্লেখ্য রাশিয়া কর্তৃক প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে প্রেরণের তখনও ১২ বছর (১৯৫৭ সাল) বাকী ছিলো।


যা হউক, আজকাল পৃথিবীর অনেক দেশ সরকারীভাবে এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট মহাকাশে প্রেরণ করে বাণিজ্যে লিপ্ত হয়েছে। এবার দেখা যাক এসব উপগ্রহ কিভাবে কাজ করে।


উপগ্রহ যোগাযোগ ব্যবস্থা কি

যোগাযোগ স্যাটেলাইটে থাকে রেডিও রিসিভার ও ট্রান্সমিটার এবং এদের এ্যান্টেনা । পৃথিবী থেকে এসব রিসিভার (প্রাপক এ্যান্টিনা) সিগন্যাল গ্রহণ করার পর তা উন্নতমানের (আমপ্লিফিকেশন এর মাধ্যমে)। এরপর এই সিগন্যালটিকে আবার করে পৃথিবীর দিকে প্রেরণ করে। প্রতিটি স্যাটেলাইটের মূল পাওয়ার সোর্স হচ্ছে সোলার সেল (সূর্যালোক থেকে প্রাপ্ত এনার্জি)। ভূ-সমগতিসম্পন্ন যোগাযোগ কৃত্রিম উপগ্রহ।


যোগাযোগ স্যাটেলাইটের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষার্থে পৃথিবীর উপর প্রধান একটি স্টেশন থাকে। এই স্টেশনে বিরাট আয়তনের অন্তত একটি রিসিভার এ্যান্টেনা (প্রায় ৩০ মিটার ব্যসসম্পন্ন) থাকা জরুরী। এছাড়া থাকতে হবে একটি শক্তিশালী রেডিও ট্রান্সমিটার (যেটির মাধ্যমে কয়েক শত ওয়ার্ট থেকে কয়েক হাজার ওয়াট সিগন্যাল প্রেরণ করা যায়)। আর্থ-স্টেশন ছোট আকারেরও হতে পারে।


বিভিন্ন বাড়িতে স্থাপিত ডিশ এ্যান্টেটা এই সিগন্যালকে ধরে টিভির পর্দায় এনে দেয়। প্রশ্ন জাগতে পারে এভাবে সিগন্যাল প্রসেসিং কেমন করে এতো দ্রুত সম্পন্ন হয়?


বাস্তবে কোন লাইভ বা সরাসরি সম্প্রচারে তো আমরা কোন সময় অপচয় হতে দেখি না? এ প্রশ্নের জবাব হলো, ইলেকট্রম্যাগনাটিন যে কোন সিগন্যাল আসলে আলোকের গতিতে চলে। অর্থাৎ প্রতি সেকেন্ডে ১,৮৬,০০০ মাইল হলো এ সিগন্যালের গতি। সুতরাং পৃথিবীর একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্ত কিংবা মহাকাশে ২০০-৩০০ মাইল ভ্রমণে অত্যল্প সময় অতিবাহিত হয়।


তাই আমরা এই মাত্র এক সেকেন্ডের ভগ্নাংশ সময় দেরী হওয়া অনুধাবন করতে পারি না। কিন্তু মঙ্গলগ্রহ থেকে একটি সিগন্যাল পৃথিবীতে আসতে পুরো ২০ মিনিট সময় লেগে যায় যদিও তা এক লক্ষ ছিয়াশি হাজার মাইল Allo গতিসম্পন্ন। সুতরাং টিভি স্টেশন যদি মঙ্গলে হয় তবে প্রতিটি সিগন্যাল বা ছবি দেখতে আমাদের ২০ মিনিট সময় অপেক্ষা করতে হতো।


মাইক্রওয়েভ

ইলেকট্রমেগন্যাটিক তেজক্রিয়ার একটি বিশেষ তরঙ্গ দৈর্ঘ্য (ওয়েভলেনথ) ও ফ্রিক্যুয়েন্সি (প্রতি সেকেন্ডে যে ক'টি ওয়েভ বিকিরণ হয় তাকে বলে ফ্রিক্যুয়েন্সি বাংলায় বলা যায় তরঙ্গহার) আছে যাকে বলে মাইক্রওয়েভ।


এসব তরঙ্গের দৈর্ঘ্য মাত্র কয়েক সেন্টিমিটার এবং এর ফিক্যুয়েন্সি ৩ থেকে ৩০০ গাইগা হার্টজ (এক গাইগা হার্টজ ১ বিলিয়ন হার্টজ) এর মধ্যে সীমাবদ্ধ। সাধারণ রেডিও ফ্রিক্যুয়েন্সি থেকে মাইক্রওয়েভের তরঙ্গ-দৈর্ঘ অনেকটা ছোট আবার ইনফ্রারেড রেডিয়েশন থেকে তা অনেকটা দীর্ঘায়িত।

সুতরাং মাইক্রওয়েভ হলো রেডিও ফ্রিক্যুয়েন্সি ও ইনফ্রারেড ফ্রিক্যুয়েন্সি থেকে ভিন্ন একটি তেজষ্ক্রিয়া। এই তেজষ্ক্রিয়া একাধিক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।


ওভেন কিভাবে কাজ করে

মাইক্রওয়েভ ওভেন বা কুকারে তরঙ্গের মাধ্যমে ইলেকট্রিক্যাল এনার্জি থেকে তাপশক্তি সৃষ্টি করে খাদ্য পরিপাক করা হয়।


টেলিফোন ও টেলিভিশন সিগন্যাল ক্যারি বা বহণের জন্য মাইক্রওয়েভ ব্যবহার করা হয়। সাধারণ রেডিও তরঙ্গের পরিবর্তে মাইক্রওয়েভ ব্যবহার অনেকটা উন্নতমানের। এরমধ্যে একটি দিক হলো, এই ওয়েভ দ্বারা বেশি তথ্য প্রচার করা সম্ভব। কারণ, যেহেতু এর ফ্রিক্যুয়েন্সি বেশি আর ইনফরমেশন ক্ষমতা ফ্রিক্যুয়েন্সির সঙ্গে সম্পর্কিত।


তবে মাইক্রওয়েভের ক্ষেত্রে একটি সমস্যা আছে। প্রেরিত সিগন্যাল পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল পেরিয়ে চলে যায় অন্যান্য সিগন্যালের মতো এটা ফিরে আসে না। এ কারণে মাইক্রওয়েভ শুধুমাত্র দিগন্ত (হোরাইজন) পর্যন্ত প্রেরণ করা সম্ভব। এই সমস্যা দূর করতে ৪০ কিলোমিটার পর পরই একেকটি রিলে স্টেশন তৈরী করে একটি নেটওয়ার্ক সৃষ্টি করা যেতে পারে।

এছাড়া মহাকাশে স্থাপিত কৃত্রিম যোগাযোগ উপগ্রহের মাধ্যমেও মাইক্রওয়েভের এই সমস্যা দূর করা যায়।


মাইক্রওয়েভ ট্রান্সমিশ ট্রান্সমিশন ও রিসেপশন

মাইক্রওয়েভ অন্যান্য সকল ইলেকট্রমেসন্যাটিক রেডিয়েশনের মতো আলোকের গতিতে চলে। তবে মাইক্রওয়েভকে কোন কোন ক্ষেত্রে দিকনির্দেশনা তথা গাইড করতে হয়। এ কাজটি এ্যান্টেনার মাধ্যমে করা যায়। এই এ্যান্টেনা এবং প্রাপক (এ্যান্টেনা কিছুটা ভিন্ন ধরণের। 


মাইক্রওয়েভ একটি নতুন টেকনোলজি। থেকে ভবিষ্যতে আরও উন্নতমানের যোগাযোগ সিস্টেম আবিষ্কৃত হবে বলে অনেকেই বলে থাকেন। তবে মাইক্রওয়েভ একটি উচ্চতর এনার্জির তেজক্রিয়া। থেকে মানুষের স্বাস্থ্যের কোন ক্ষতি হয় কি না সেটাই ভাবার বিষয়। কায়ে আঁশ গবেষণা বাংলা শ


ফাইবার অপটিক্স

অপেক্ষাকৃত নতুন আরেক ধরণের যোগাযোগ টেকনোলজির উদ্ভাবন ঘটেছে যার নাম হলো ফাইবার অপটিক্স। চুলের মতো সরু কাঁচের তৈরী ফাইবার টিউবের ভেতর দিয়ে আলো প্রেরণ করে তথ্য প্রচার হচ্ছে এই নতুন প্রযুক্তি।


কাঁচের ভেতর থেকে আলো বেরিয়ে আসা সম্পূর্ণ অসম্ভব কারণ, আলোর তুলনায় ফাইবারের রিফ্লেকটিভ ইনডেক্স (আলো প্রতিবিম্ব হওয়ার একটি পরিমাপ) অনেকটা বেশী। এটা আগে থেকে জানা, আলোর নিজের রিফ্লেকটিভ ইনডেক্স যদি যে মাধ্যমের উপর দিয়ে সে চলমান তার তুলনায় কম হয় তবে, তা বেরিয়ে আসতে পারে না। অর্থাৎ আলো আটকা পড়ে যায়।


ফাইবার অপটিক ক্যাবলের সুবিধা অসুবিধা 

ফাইবার কাঁচের ভেতর থেকে তাই আলো সামনের দিকে চলমান থাকে। ফাইবার কাঁচ আয়নার মতো কাজ করে। এখন, যে আলো এই টিউবের ভেতর দিয়ে ভ্রমণ করবে তাতে যদি তথ্য থাকে তবে তা সহজেই এক জায়গা থেকে অপর জায়গায় প্রেরণ করা যেতে পারে। আমরা আগেই বলেছি, যে কোন তথ্যকে প্রযৌক্তিক উপায়ে তিনটি ভিন্ন এনার্জিতে রূপান্তর করা যায়।


এগুলো হলো, ইলেকট্রিক (কারেন্ট), ইলেকট্রমেগন্যাটিক (রেডিও ওয়েভ) এবং আলো। সুতরাং প্রযুক্তির মাধ্যমে অডিও-ভিডিও কিংবা অন্য কোন তরঙ্গকে আলোক তরঙ্গে রূপান্তর করা যেতে পারে। এরপর এই আলোক তরঙ্গকে ফাইবার অপটিক্স দিয়ে প্রেরণ করে যোগাযোগের সিস্টেম তৈরী সম্ভব।



আমাদের শেষ কথা

আধুনিককালে ফাইবার অপটিক্স টেকনোলজি পশ্চিমা দেশে সর্বত্র খুব দ্রুত গজিয়ে উঠছিলো। টিভি, রেডিও এই টেকনোলজির মাধ্যমে ধীরে ধীরে ঘরে ঘরে স্থাপিত হচ্ছিলো। ফাইবার অপটিক্স কমিউনিকেশনও অন্যান্য সিস্টেম থেকে অনেকটা ভালো। এর মাধ্যমে অসংখ্য ধরণের সিগন্যাল সহজে ও দ্রুত প্রেরণ করা যায়। মুণা বিভাগ সিলে লাদেশ। 

Previous Post Next Post

Contact Form