সানস্ক্রিন সম্পর্কে পুরনো ধারণা বাতিল করুন | How To Apply Sun-Screen

সানস্ক্রিন সম্পর্কে পুরনো ধারণা বাতিল করুন | How To Apply Sun-Screen

বেস্ট সানস্ক্রিন
ত্বক বুঝে সানস্ক্রিন

গ্রীষ্মে ত্বকের যত্ন

যে কারও ত্বকের দারুণ ক্ষতি করে তাকে বৃদ্ধে রূপান্তরিত করে ফেলছে। ত্বকে শুধু ভাঁজ পড়াই নয়, ত্বককে বিবর্ণ করে তোলে এবং ত্বকের ক্যান্সার ঘটায় সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি।


ত্বকের কোষগুলো মরে গিয়ে ত্বক হারিয়ে ফেলে তার স্বাভাবিক উজ্জ্বল্য। ত্বকের যৌবন ধরে রাখতে বিজ্ঞানীরা আজ উঠে পড়ে লেগেছেন।


সানস্ক্রিন সম্পর্কে পুরনো ধারণা বাতিল করুন

অধিকাংশ লোক মনে করেন সানनি গ্রীষ্মের প্রখর রোদে বেরোবার আগে মেখে বের হতে হয়। কিন্তু এ ধারণাটি এখন পরিব আপনাকে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে যদি সত্যিই আপনি ত্বকের যৌবন ধরে রাখতে উৎকুই সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।


এ কথা অনেকবার আপনি শুনে থাকবেন যে, যখন সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন সেই সানস্ক্রিনে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর যেন কমপক্ষে ১৫ থাকে। অর্থাৎ ১৫-এর নিচে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর থাকলে তা ত্বকের কোন কাজে আসে না। বাজারে অনেক ধরনের সানস্ক্রিন রয়েছে। এর কোনটিতে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা এসপিএফ কোনটিতে ৪৫, এমনকি ৬০ও রয়েছে। কিন্তু আপনার জন্য প্রযোজ্য কোনটি ?


কিভাবে বুঝবেন কোন সানস্ক্রিনটি আপনাকে ব্যবহার করতে হবে ?

এ প্রোডাক্টটি কতক্ষণ আপনার ত্বকে স্থায়ী থাকে । এটা হলো এমনই এক পদার্থ যা মূলত সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিকে প্রতিহত করে।


একটি এসপিএফ ১৫ লোশন বা ক্রীমের গুণগত অর্থ হলো অরক্ষিত অবস্থায় আপনার ত্বক যেটুকু রক্ষা পেতে পারে। এসপিএফ ১৫ লোশন বা ক্রীম আপনার ত্বকে তার চেয়ে ১৫ গুণ বেশি রক্ষা করে। তেমনি এসপিএফ ৮ সানস্ক্রিনটি ৮ গুণ বেশি রক্ষা করে।

সানস্ক্রিনটি ১৫০ মিনিট ধরে আপনার ত্বককে রক্ষা করবে। আর যদি রোদে ২০ মিনিট কাটালে আপনার ত্বক লাল হয়ে ওঠে তাহলে এ সানস্ক্রিনটি আপনাকে ৩০০ মিনিট অর্থাৎ পাঁচ ঘন্টা ধরে রক্ষা করবে। এসপিএফ কেবলমাত্র। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি 'বি' এর বেলায় প্রযোজ্য ।


সানস্ক্রিন কিভাবে ব্যবহার করতে হয়

নাজুক ত্বকের লোকদের জন্য এসপিএফ ১৫ হলো উৎকৃষ্ট সানস্ক্রিন। এটা প্রায় ১৫ শতাংশ সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি 'বি'-কে প্রতিহত করে। কালো ত্বকের লোকদের জন্য এসপিএফ ৮ থেকে ১২ যথেষ্ট। কারণ কালো ত্বকের লোকদের শরীরে মেলানিন নামক যে রঞ্জক পদার্থ থাকে সেটাই প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন হিসাবে কাজ করে। আর এ কারণেই এশিয়ার অধিবাসীদের ত্বকের ক্যান্সার কম হয়।


এখানে ঋতু কোন বিষয় নয়। সব ঋতুতেই সানস্ক্রিন সমান প্রযোজ্য। অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ এসপিএফ ৩০-এর ওপরে যাবার কোন বিশেষ কারণ খুঁজে পান না। এসপিএফ ৩০ সানস্ক্রিন ৯৭ শতাংশ সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি 'বি' কে প্রতিহত করে।


কি পরিমাণ সানস্ক্রিন আপনি মুখে মাখবেন ?

উচ্চমাত্রার এসপিএফ ত্বককে সুরক্ষা করে বটে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাসায়নিক উপাদানসমূহ ত্বকে চুলকানি ও জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করে। গাঢ় করে সানস্ক্রিন মাখুন আপনি শুধু সানস্ক্রিন মাখার কথাই শুনছেন।


আপনি মুখমণ্ডলের জন্য প্রায় এক চা চামচ এবং সমস্ত শরীরের জন্য দু চামচ সানস্ক্রিন মাখুন। যদি আপনি এর অর্ধেক মাখেন তাহলে আপনার প্রমাত্রা অর্ধেক কমে যাবে।


লোশন কিনুন দেখেশুনে

আপনি যদি অন্য সানস্ক্রিন লোশন কিনতে চান আপনি অবশ্য চেক করে নেবেন তাতে জিঙ্ক অক্সাইড এবং টাইটানিয়াম ডাইঅক্সাইড আছে কিনা। এরা এভোবেনজোন কিন্তু অন্যান্য রাসায়নিক সানস্ক্রিন উপাদানের মতো ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে সূর্যরশ্মিকে শুষে নেয় না, বরং এরা শরীরের প্রতিবন্ধক হিসাবে কাজ করে অর্থাৎ এরা ত্বকের উপরিভাগে অবস্থান করে এবং সূর্যরশ্মিকে প্রতিফলিত করে। জিঙ্ক অক্সাইড ি টাইটানিয়াম ডাইঅক্সাইড সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি 'এ'-কেও প্রতিহত করে। যে এ উপাদান দুটো ত্বকে শোষিত হয় না তাই সংবেদনশীল ত্বকের জন্য এরাই উৎকষ্ট।

সানস্ক্রিন টিপস
গরমের জন্য সানস্ক্রিন

সব জায়গায় সানস্ক্রিন

আপনি শুধু স্থলেই নয়, পানিতে ডুব দেয়ার আগেও ওয়াটারপ্রুফ সানস্ক্রিন মেখে নিতে পারেন। একটি কথা মনে রাখতে হবে, সানস্ক্রিন ত্বকে মাখার সাথে সাথেই সেটা কাজ করা শুরু করে দেয়। 

আপনি যখন ভেজা অবস্থায় রয়েছেন তখন সানস্ক্রিন ৮০ মিনিট আপনাকে রক্ষা করে। তাই প্রতি এক ঘন্টা বা দু'ঘন্টা অন্তর সানস্ক্রিন মাখতে হবে।


কসমেটিক্স বা প্রসাধন হিসাবে গণ্য করবেন না

এসপিএফ ময়েশ্চারাইজার, ফাউন্ডেশন এবং অন্যান্য ত্বকের প্রসাধন নিয়ে আপনি বা ধারণা করেন সেগুলো আপনার ধারণার চেয়ে ত্বককে কম রক্ষা করে । সর্বদা পূর্ণমাত্রায় এসপিএফ ব্যবহার করতে হবে। অর্থাৎ প্রায় এক চা চামচ সানস্ক্রিন আপনার মুখে মাখতে হবে।


অথচ প্রসাধনী হিসাবে মাখতে গেলে আপনি সেটা পারবেন না। সবচেয়ে ভাল হয় আপনি যখন কমেটিক্স কিনবেন।


ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খান

সম্প্রতি জার্মানিতে এক গবেষণায় দেখা গেছে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি ও ভিটামন-২।ত্বককে সূর্যের আলোয় পুড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। বেশি করে সবুজ ও হলুদ ফলা এবং সবজি খান (এগুলোতে ক্যারোটেনয়েড থাকে)। খাদ্য যখন ক্ষতিকর অনেকে বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য যেমন আম, লেবু, গাজর, প্রকৃতির রস ত্বকে মেখে থাকে। কিন্তু এ রসে থাকে 'সোরালেন" নামক উপাদান।


সংবেদনশীল হয় এবং আপনি এসব রস ত্বাকে মাখেন তাহলে সোরালিনের প্রভাবে আপনার ত্বক রোদে সহজেই পুড়ে যাবে। এমনকি আপনি যদি এসব ফল পেয়েও থাকেন তাহলে রোদে বেরুবার আগে দয়া করে ত্বক ধুয়ে নেবেন যেন রস ত্বকে লেগে। না থাকে।


ওষুধ যখন ত্বকের শত্রু

কিছু কিছু ওষুধ সেবনের ফলে আপনার ত্বক সহজেই রোদে পুড়ে যেতে পারে। এসব ওষুধের মধ্যে রয়েছে আইবুপ্রোফেন, এন্টিবায়োটিক টেট্রাসাইক্লিন ও ডক্সিসাইক্লিন এবং গর্ভনিরোধক বড়ি। এসব ওষুধ সেবনের ফলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি আপনার শরীরের ত্বকে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।


যদি আপনি আপনি কোন ওষুধ সেবন করে থাকেন তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের মতামত নেবেন যে, এতে আপনার আলোর প্রতিক্রিয়া হবে কিনা এবং এর জন্য অতিরিক্ত সতর্কতা নিতে হবে কিনা।


ব্রণ সম্পর্কে সতর্ক থাকুন

আপনি কি জানেন সূর্যরশ্মির কারণে ত্বকে ব্রণ দেখা দিতে পারে ? যাঁরা রোদে দীর্ঘক্ষণ থাকেন তাঁদের ত্বকের প্রাকৃতিক তেল স্বাভাবিকভাবে নিঃসরণ হতে পারে না। লোমকূপ আটকে গিয়ে সেখানে ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে বিশ্রী ব্রণের সৃষ্টি হয়।


সানপ্রুফ পোশাক পরুন

গরমে এমন পোশাক আপনি পরবেন যা সূর্যের আলোকে প্রতিহত করতে পারে। কিন্তু কেমন হবে সেই পোশাক ?

সাধারণ পোশাক পরলে তা ৫ থেকে ৯ এসপিএফ এর কাজ করে উদাহরণস্বরূপ একটি টি-শার্ট এসপিএফ ৭-এর কাজ করে। কিন্তু কালো পোশাক সানপ্রুফ হিসাবে পরুন। এ পোষাক সূর্যের আলোকে প্রতিহত করবে। মাথায় ক্যাপ পরুন কিংবা সব সময় ছাতা মাথায় দিয়ে চলুন।


সময় বেছে চলুন

বাদুড় যেমন সারাদিন লুকিয়ে থেকে সন্ধ্যার আগে বের হয় আপনিও চলুন তেমনভাবে। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত সূর্যের আলোতে অতিবেগুনি রশ্মির পরিমাণ তীব্র থাকে তাই বাইরে কোন কাজ থাকলে তা খুব সকালে কিংবা পড়ন্ত বিকালে সেরে ফেলুন ।


পানির ব্যাপারে সাবধান হন

পানি এক বিস্ময়কর বস্তু। কিন্তু কি নেই এতে? দুটো বাজে জিনিস মিশে আছে এর সাথে। একটি ক্লোরিন, অপরটি লবণ। এ দুটো জিনিসই ত্বকে চুলকানি ঘটায়, চুলের ক্ষতি করে, ত্বকের রং পরিবর্তন করে।



আমদের শেষ কথা

সুইমিংপুলে গোসল করার সময় কিংবা বাসার পানিতে যদি ব্লিচিং পাউডার দেয়া থাকে সেখানে গোসল করার সময় এসব রাসায়নিক দ্রব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধকতা গড়ে তুলতে মুখমণ্ডলে পেট্রোলিয়াম জেলি অথবা অন্য কোন ওয়াটার রেজিস্ট্যান্ট ময়েশ্চারাইজার মেখে নিন। চুলে কশিনার মাখুন সাঁতার কাটার পর পরই কণ্ডিশনার শ্যাম্পু দিয়ে গোসল সেরে ফেলুন।






Previous Post Next Post

Contact Form