চুল সম্পর্কে কয়েকটি ভুল ধারণা | Hair Tips Bangla

চুল সম্পর্কে কয়েকটি ভুল ধারণা  | Hair Tips Bangla

চুল সম্পর্কে কয়েকটি ভুল ধারণা
চুল সম্পর্কে কয়েকটি ভুল ধারণা

চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা। কবি জীবনানন্দ দাশের এই পংক্তি থেকে চুলের প্রতি দুর্বার আকর্ষণ ও আকৃতির প্রকাশ ঘটেছে। যে নারীর চুল নিয়ে কি না করেন, চুলের চিন্তায় সেই নারীর কিন্তু চোখে ঘুম নেই।


শুধু নারী কেন চু পুরুষরাও কিন্তু কম ভাবেননা। তাই চুলের যত্নে ব্যবহৃত হয়ে আসছে নানান রকম জিনিস। আর সে কারণে চা পাতা, কফি, লেবু, ডিম ইত্যাদির মত খাদ্যবস্তুকেও দেখা যায় পেটে চালান না করে মাথার উপর রেখে তথাকথিত চুলের যত্নে ব্যবহার করা হচ্ছে।


তাছাড়া চুলের যত্নে তেলের চিরাচরিত অনর্থক ব্যবহার তো আছেই। কিন্তু নিরাশার কথা হচ্ছে এইসব আয়োজনের কোনটাই চুলের মানোন্নয়নে কোন কাজে আসে না। এটাই বৈজ্ঞানিকভাবে সত্যি।

চুল সম্পর্কে ভুল ধারণা অনেক চুলের যত্ন, পরিচর্যা, বৃদ্ধি ইত্যাদি নিয়ে অনেকের মধ্যেই বিভিন্ন রকম ভ্রান্ত ধারণ প্রচলিত আছে। উত্তরাধিকার সূত্রে এইসব ভুল ধারণাকে আমরা ধারণ করে আসছি। ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে মিথ্যে চাকচিক্যে অযথাই পুলকিত হচ্ছি। ফলে চুলের যত্নে যোগ হয়েছে মাত্রাতিরিক্ত বাহুল্য। 


চুল সম্পর্কে কয়েকটি ভুল ধারণা উল্লেখ করা যাক-

১. বার বার চুল আঁচড়ানো ভালো, সুন্দর চুলের জন্য দৈনিক অন্তত ১০০ বার চুলে ব্রাশ বা চিরুনির আঘাত দেয়া ভালো। টাইট করে চুল বাঁধলে চুল লম্বা হয়।

২. চুল কামালে বা শেভ করলে চুল ঘন ও কালো হয়। মাথায় খৈল ব্যবহারের চুলের খুশকি দূর হয়। তেল চুলের পুষ্টি যোগায় ও চুল পড়া বন্ধ হয়।

৩. মাথা ম্যাসেজ করলে চুল বৃদ্ধি পায়। চুলে ভিটামিন যুক্ত তেল কিংবা পুষ্টিকর ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার (যেমন ডিম) মাখলে চুল সুন্দর হয়।

৪. প্রতিদিন চুল ধুয়ে পরিষ্কার করলে চুল নষ্ট হয়ে যায়। একটি সাদা চুল তুললে সেখান থেকে দুটি সাদা চুল গজাবে।


চুল সম্পর্কে প্রচলিত এইসব ধারণাগুলোর কোনটাই কিন্তু ঠিক নয়। এইসব কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এগুলো মেনে চলা মানে অর্থ ও সময়ের অপচয়। তবু তাই নয়, এইসব ভ্রান্ত ধারণা প্রয়োগে চুল ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এবার একে একে প্রতিটি ভুল ধারণা সম্পর্কে স্বল্প পরিসরে আলোকপাত করা যাক ।


ভুল ধারণা : বার বার চুল আঁচড়ানো ভালো, সুন্দর চুলের জন্য দৈনিক অন্তত ১০০ বার চুলে ব্রাশ বা চিরুনির আঘাত দিতে হবে?

বৈজ্ঞানিক সত্য:  বার বার কিংবা খুব জোরে চুল আঁচড়ালে চাপের কারণে চুল ছিঁড়ে অথবা শেকড় সুদ্ধ উঠে আসতে পারে। এছাড়াও অতিরিক্ত চুল ব্রাশের কারণে চুলের সবচেয়ে বাইরের চক্‌চকে আবরণ ক্ষ হতে পারে। চুলের এই বাহ্যিক আবরণ চুলের প্রতিরক্ষার কাজ করে থাকে।


চুলের যত্ন কিভাবে নিতে হয়

চুলের বাহ্যিক আবরণ মাথার ঘর্ম গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত তৈলাক্ত পদার্থ চুলের ঔজ্জ্বল্য ধরে রাখার চেষ্টা করে। ফলে চুলের উপর আলো পড়লে ঝলমলে দূত্যি ছড়িয়ে স্বাস্থ্যেজ্জ্বল চুলের উপস্থিতি প্রমাণ করে দেয়।


কিন্তু বা বার ব্রাশ করলে চুলের বাহ্যিক আবরণে ঘর্মগ্রন্থি নিঃসৃত তৈলাক্ত পদার্থ যথার্থ মাত্রায় বিস্তৃত হওয়ার সুযোগ পায়না। ফলে এক্ষেত্রে চুলের উপর আলো প্রতিফলিত হতে পারেনা বলে চুলকে নিষ্প্রাণ ও রুক্ষ দেখায়। চুলের বাহ্যিক আবরণের এই ক্ষতি এক পর্যায়ে চুলের শাঁসকেও আক্রান্ত করতে পারে। যার পরিমাণে চুল হয় রুক্ষ ও ভঙ্গুর।


ঘন ঘন চুল ব্রাশের কারণে মাথার ত্বকে অবস্থিত ঘর্মগ্রন্থি মাত্রাতিরিক্ত উদ্দীপিত হয়ে সেবাম নামক তৈলাক্ত পদার্থের বাড়তি নিঃসরণ ঘটায়। ফলে তৈলাক্ত পদার্থে সিক্ত হয়ে চুল নেতিয়ে থাকে। এ অবস্থায় চুল আঁঠালো ও চুপসানো দেখায় ৷


চুলের যত্নে ৫টি কার্যকরী হেয়ার কেয়ার টিপস:

১. খুশকি থাকালে বার বার মাথা না আঁচড়ানো।

২. জট পাকানো চুলে চিরুণি ব্যবহারের চেষ্টা করলে চুল ছিঁড়ে কিংবা উঠে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। 

৩. পার্লার থেকে সেট (পার্ম,কার্ল...) করা চুলে বার বার চিরুণি ব্যবহার করলে চুল নষ্ট হতে পারে । কারণ এসব চুল স্বাভাবিক চুলের তুলনায় ভঙ্গুর ও নরম থাকে।

৪. . চুল সুরক্ষিত রাখুন

৫. আলতোভাবে তোয়ালে ব্যবহার


কাজেই প্রকৃত সত্য হচ্ছে, চুলে অতিরিক্ত চিরুণি বা ব্রাশ ব্যবহার করা ভাল নয়। চুল ব্রাশ করার জন্য আদর্শ চিরুণি হচ্ছে-শক্ত প্লাষ্টিকের তৈরি (ভলাকানাইজড) বড় ও ফাঁকা দাঁত বিশিষ্ট চিরুণি। এই ধরনের চিরুণি দিয়ে দিলে ৩/৪ বার চুল আঁচড়ানোটাই হচ্ছে আদর্শ। আর চুল কম আঁচড়ানোটাই ভাল ।

 

ভুল ধারণা : টাইট করে চুল বাঁধলে চুল লম্বা হয়?

বৈজ্ঞানিক সত্য : চুল বাঁধার ব্যাপারে সারা বিশ্বেই একটি বিষয় ব্যাপক ভাবে প্রচলিত হচ্ছে-আটসাঁট করে বা টাইট করে চুল বাঁধা। এর কারণ অনেকের ধারণা টাইট করে চুল বাধলে চুল লম্বা হয়। কিন্তু ধারণাটি পুরোপুরি ভুল।


চুল টেনে লম্বা করার বহু ন এটি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। বরং চুল টাইট করে বাঁধলে বিপত্তি আছে। টাইট করে চুল বাঁধার কারণে গোড়া আলগা হয়ে চুল পড়ে যায়। চুল টাইট করে বাধার কারণে। চুল পড়ার এই রোগকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয়-ট্রাকশন এ্যালোপেসিয়া।


ভুল ধারণা : চুল কামালে বা শেভ করলে চুল ঘন ও কালো হয়?

বৈজ্ঞানিক সত্য : কারও চুল একটু পাতলা হলে কিংবা লালচে ভাব থাকলেই শুরু হয় শেভ করা বা কামানোর পালা। ছোট বেলায় প্রায় সব শিশুকে ধরে বছরে ২/১ বার করে চুল কামিয়ে দেন মায়েরা। উদ্দেশ্য একটাই তা হচ্ছে, চুল ঘন ও কালো করা। চুল কামানোর এই প্রবণতা যুবক ও বয়স্কদের মাঝেও লক্ষণীয়। আবার কেউ চুল পড়ে যাচ্ছে বলে চুল কামিয়ে ফেলেন।


প্রকৃত পক্ষে চুল কামালে চুল ঘন কিংবা কালো কোনটাই হয়না এবং চুল পড়াও বন্ধ হয়না। চুল ঘন কিংবা কালো হওয়ার ব্যাপারটি পুরোপুরিই বংশগত। এর জন্য কোন চিকিৎসা ব্যবস্থা অদ্যাবধি বের হয়নি। তবে চুল পাতলা ও লালচে হওয়ার সঙ্গে অনেক সময় রোগের সম্পর্ক থাকতে পারে। মাথায় কোন ওষুধ লাগানোর সুবিধার্থে চুল কামানোর দরকার হলে তা করা যেতে পারে।

কিন্তু চুল ঘন বা কালো করার জন্য চুল কামালে কোনই লাভ নেই ।


ভুল ধারণা : মাথায় খৈল ব্যবহারে চুলের খুশকি দূর হয়?

বৈজ্ঞানিক সত্য : মাথায় খুশকি দূর করার জন্য অনেকেই মাথায় সরিষার খৈল ব্যবহার করেন। সরিষা থেকে তেল বের করার পর বর্জ্য হিসাবে প্রাপ্ত এই খৈল গো খাদ্য হিসাবে সমাদৃত। খৈল ব্যবহার করলে মাথার শুষ্ক খুশকিগুলো ভিজে মাথার ত্বকে লেগে থাকে বলে দেখা যায় না। আর একেই অনেকে খুশকি চলে গেছে বলে ভাবেন এবং ভুল করেন।


খৈল ব্যবহারে চিরতরে খুশকি দূর করার উপায়

খৈল ব্যবহারে খুশকি কখনও দূর হয়না, তা কেবল মাত্র অদৃশ্যমান হয়। চুলে খুশকি হয় বিভিন্ন কারণে। কারণ নির্ণয় করে এই খুশকি দূর করতে হবে। বিভিন্ন ধরনের খুশকির বিভিন্ন চিকিৎসা।


তবে খুশকি সম্পূর্ণ রূপে নিরাময়ের কোন গ্যারান্টি নেই। চিকিৎসা ও পরিচর্যার মাধ্যমে একে কেবল দমিয়ে রাখা যায়। আর সেটাই আসল কাজ। এন্টি ড্যান্ড্রাফ শ্যাম্পু, এন্টি ফাঙ্গাল প্রিপারেশন ব্যবহার এবং চুল শুকনো ও পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন।


মাথায় খৈলের বোঝা না বাড়িয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। খৈল ব্যবহারে তাৎক্ষণিকভাবে পুলকিত হবেন কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হবেনা।


ভুল ধারণা : তেল চুলের পুষ্টি যোগায় ও চুল পড়া বন্ধ হয়?

বৈজ্ঞানিক সত্য : যদিও চুলের যত্নে তেলের ব্যবহার অতি প্রাচীন কিন্তু সত্যি কথা হচ্ছে চুলে তেল ব্যবহারে কোন লাভ হয় না। তেল চুলের কোন পুষ্টির কাজে আসে। না। চুলের পুষ্টি চুল শিকড়ের মাধ্যমে শরীর থেকেই গ্রহণ করে থাকে।


চুলের তৈলাক্ততা রক্ষার জন্য মাথার ত্বকে অবস্থিত সিবাসিয়াস গ্র্যান্ড থেকে এক ধরনের তৈলাক্ত পদার্থ নিঃসৃত হয়ে থাকে। এই তৈলাক্ত পদার্থের মাধ্যমে চুল নিজেই নিজের সৌন্দর্য বজায় রাখতে সক্ষম হয়। কাজেই চুলের সৌন্দর্য রক্ষায় তেলের কোন দরকার নেই। অনেকে মনে করেন তেল চুল পড়া রোধ করে-এ ধারণাটিও ভুল। চুল পড়ার অনেক কারণ আছে।


এইসব কারণের কিছু কারণ চিকিৎসা যোগ্য আর কিছু রয়েছে অচিকিৎসাযোগ্য। তেল চুল পড়ার চিকিৎসায় কার্যকরী বলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের কাছে কখনো বিবেচিত হয়নি। চুলে তেল ব্যবহার পুষ্টিগত কোন লাভ নেই। কিন্তু তেল ব্যবহারে কখনো কখনো চুলের ক্ষতি হওয়ার আশংকা থাকে।

চুলের যত্নে হেয়ার প্যাক
চুলের যত্নে হেয়ার প্যাক

চুলের যত্নে হেয়ার প্যাক

কাজেই তেল চুলকে কালো করে বলে যে ধারণা করা হয়। সেটিও মিথ্যে।


ভুল ধারণা : মাথা ম্যাসেজ করলে চুল বৃদ্ধি পায়?

বৈজ্ঞানিক সত্য : মাথা ম্যাসেজে চুল লম্বা, ঘন ও ঝলমলে হয় এমন একটি ধারণা অনেক দিন থেকে প্রচিলত আছে। এর পেছনে যুক্তি হচ্ছে মাথা ম্যাসেজ করলে চুলের গোড়ায় রক্ত সরবরাহ বেড়ে যায়। এই ধরনের ডাক্তারি যুক্তি বিশ্বাস না হওয়ার কথা নয়।


কিন্তু মাথার ত্বকে স্বাভাবিক ভাবেই রক্ত সরবরাহ এতটা বেশি যে সেখানে ম্যাসেজ করে বাড়তি রক্ত সরবরাহের দরকার নেই। তা ছাড়া চুলের বৃদ্ধি, লম্বা, ঘন অর্থাৎ পূর্ণাঙ্গ সৌন্দর্যের প্রায় পুরোটাই জন্মগত ভাবে অর্জিত হয়, আর কিছুটা নির্ভর করে যত্নের উপর। প্রকৃতপক্ষে চুলের যত্ন মানে চুলকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা।

কাজেই মাথা ম্যাসেজ করে মানসিক শিথিলায়ন হতে পারে কিন্তু চুলের কোনই লাভ হবে না।


ভুল ধারণা : চুলে ভিটামিন যুক্ত তেল কিংবা পুষ্টিকর ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার (যেমন- ডিম) মাখলে চুল সুন্দর হয় ।

বৈজ্ঞানিক সত্য : চুল পুষ্টি সংগ্রহ করে শেকড়ের মাধ্যমে। শেকড় জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রক্ত থেকে এই পুষ্টি গ্রহণ করে থাকে। চুলের যাবতীয় পুষ্টি আসে রক্ত থেকে। তাই চুলে পুষ্টি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার জন্য খাবারে চুলের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও খনিজ পদার্থ গ্রহণ করতে হবে।


আমরা যে খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করি তা সরাসরি শরীরের কাজে লাগেনা, খাদ্যদ্রব্য মুখ থেকে পাকস্থলী ও পরিপাকতন্ত্র পর্যন্ত হজমের জটিল প্রক্রিয়ার পর তা শরীরের কাজে আসে। কাজেই সরাসরি কোন খাদ্যদ্রব্য চুলে মেখে লাভ হবেনা ।


চুলের যত্নে পেঁয়াজের উপকারিতা

তাছাড়া চুল বাইরে থেকে কোন ধরনের পুষ্টি উপাদান বা ভিটামিন গ্রহণ করার ক্ষমতাই রাখে না। তখন চুলের গায়ে দুনিয়ার যাবতীয় পুষ্টি ও ভিটামিনের ভান্ডার ঢেলে দিলেও কোন লাভ হবে না।


সুতরাং তেলে ভিটামিন থাকলেই কী আর না থাকলেই কী! কাজেই পুষ্টিকর খাবার মাথায় না ঢেলে পেটে চালান করলে অনেক লাভ হবে। আর তেলের বিজ্ঞাপণে যেসব প্রতিশ্রুতির কথা বলা হয় সেগুলো সর্বৈব মিথ্যা। ব্যবসায়িক কায়দার জন্যই বিজ্ঞাপণের এই কান।


ভুল ধারণা : প্রতিদিন চুল ধুয়ে পরিষ্কার করলে চুল নষ্ট হয়ে যায়?

বৈজ্ঞানিক সত্য : প্রকৃত পক্ষে ময়লাই হচ্ছে চুলের আসল শত্রু। চুলে ধূলো ময়লা লেগে থাকলে তা চুলের বাহ্যিক আস্তরণকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ময়লা হলে চুল প্রথমে হাতের তালু আঁঠালো হয়ে যায়, পরে ডা মলিন হয়ে চুপসে থাকে।


কাজেই চুল পরিষ্কারের মাধ্যনে চুলের ময়লা ও মাথার ত্বকের মৃত কোষ দূর করাটাই আসল কাজ। চুল পরিষ্কার থাকলে মাথার ত্বকের সেবাম গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত তৈলাক্ত পদার্থ প্রতিটি চুলের গায়ে সমভাবে ছড়াতে পারে।


লেবু দিয়ে খুশকি দূর করার উপায়

লেবু দিয়ে খুশকি দূর করার উপায়ষ্কার করা মানেই হচ্ছে শ্যাম্পু/কোমল সাবান দিয়ে চুল ধোয়া। কেউ কেউ দৈনিক চুল ধোয়া নিয়ে বিধায় থাকেন। তাদের ধারণা দৈনিক চুল ধুলে চুল উঠে যায়। আসলে এই ধারণাটি ঠিক নয়।


বরং চুলে ময়লা থাকলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি চুল পড়ে যায়। সুতরাং পরিষ্কার রাখলেই চুল কম পড়বে। চুল পড়া রোধে তথ্য চুল পরিষ্কার রাখতে প্রতিদিন চুল ধোয়া যায়। এতে কোন ক্ষতি নেই।


ভুল ধারণা : একটি সাদা চুল তুললে সেখান থেকে দুটি সাদা চুল গজাবে?

বৈজ্ঞানিক সত্য : একটি সাদা চুল তুলে ফেললে সেখান থেকে যথাসময়ে একটি সাঙ্গা চুলই নতুন করে গজাবে। এ ক্ষেত্রে দুটি চুল গজানোর কোন সুযোগ নেই। চুল সাদা হওয়ার জন্য দায়ী উপাদানটি হচ্ছে মেলানিন। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেলানিনের মাত্রা ক্রমশ কমে যাওয়ার কারণেই চুল ধূসর থেকে সাদা হতে থাকে। 


চুল যখন সাদা হওয়ার তখন তা এমনিতেই হতে থাকে। এক্ষেত্রে একটি সাদা চুল তুলে ফেললে সেখান থেকে দ্বিগুণ সাদা চুল গজানোর কোন সুযোগ নেই। এ ধরনের চিন্তা অবান্তর। চুল সম্পর্কে এরকম অনেক ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত আছে। যেমন অনেকে মনে করেন লেবুর রস কিংবা মেহেদী ব্যবহারের চুলে কোন ক্ষতি হয়না। এ ধারণাটিও পুরোপুরি সঠিক নয়।


চুলের জন্য ক্ষতিকর উপাদান 

কোন উপাদানের পি-এইচ ৭ হলে তাকে নিরপেক্ষ বলে বিবেচনা করা হয়। চুলের সঠিক পি-এইচ হচ্ছে ৫.৫ । এই মাত্রার কোন উপাদান চুলে লাগালে তা চুলকে ভঙ্গুর করে তুলতে পারে।


রাতে চুলের যত্ন

কিন্তু এ ব্যাপারে অনেকেই সচেতন নন। উল্টো দেখা যায় যেসব বিষয় গুলো চুলের ক্ষতি করছে সেগুলোকে মিথ্যে সচেতনতার বশে আগ্রহ ভরে গ্রহণ করা হচ্ছে। যেহেতু চুল সৌন্দর্যের একটি অপরিহার্য উপাদান তাই এ নিয়ে বিভ্রান্তিও বেশি। অনেকের ধারণা চুল সমস্যা চিকিৎসা বিজ্ঞানের কোন বিষয় নয়, এটি বিউটিশিয়ানদের ব্যাপার।


সাধারণের এই ধারণা মোটেও ঠিক নয়। চুল শরীরেরই একটি অঙ্গ। এর কোন সমস্যা চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় কোন না কোন রোগ হিসাবে চিহ্নিত। হতে পারে চুল সমস্যার সব সমাধান এখনও উদ্ভাবিত হয়নি।


এই বিশ্বাস টুকু দিয়েই চুল নিয়ে ভুল ধারণা দূর হওয়া শুরু হতে পারে।


আমাদের শেষ কথা 


যে সমস্যার সমাধান আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের হাতে নেই সে সমস্যার সমাধান বিজ্ঞানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় এমন কোন ব্যক্তি বিশেষের কাছে রয়েছে সেটা মনে করা কতটুকু জ্ঞানের পরিচায়ক।

কাজেই চুল সমস্যার সমাধান খুঁজতে চর্ম বিশেষজ্ঞের (ডার্মাটোলজিস্ট) পরামর্শ নেয়াটাই যুক্তিযুক্ত।
Previous Post Next Post

Contact Form