New Motor Vehicle Registration | অনলাইনে নতুন বাইক রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম|Noton Bike Registration

অনলাইনে নতুন বাইক রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম

New Motor Vehicle Registration | অনলাইনে নতুন বাইক রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম|Noton Bike Registration

নতুন বাইক কেনার পরে আমরা সবাই নিজের নামে করতে রেজিস্ট্রেশন করে থাকি। যাতে করে নতুন গাড়ি টি নিজের নামে থাকে। অধিকাংশ লোক কই মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার জন্য শোরুমের লোকেদের টাকা দেয়; তারা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি টাকা নিয়ে থাকে। কিন্তু আমরা যদি নিজেই নিজের নিজের মোটর জানতে হিসাব করি তাহলে অল্প টাকা দিয়ে কাজটি সম্পন্ন করতে পারি। 

আমরা অনেকে জানি না কিভাবে নতুন মোটরযান রেজিস্ট্রেশন করতে হয়; আপনি চাইলে আপনার বাইক অথবা মটরযান রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন এবং কত সিসি বাইকের জন্য কত টাকা লাগবে ও কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে, কিভাবে ব্যাংকে টাকা জমা দিব, সকল সমস্যার সমাধান নিয়েই আমি আজকে এই পোস্টে আপনাদের সাথে আলোচনা করব। 

আমি আশা করছি আপনি যদি এই পোস্টটি সম্পুর্ণ ভালোভাবে পড়েন তাহলে অবশ্যই আপনি নিজের বাইক নিজেই রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন/মালিকানা চেঞ্জ করতে পারবেন।  নতুন বাইক রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত সকল পদ্ধতি নিম্নে আলোচনা করা হল। 



কেন মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন জরুরী?

সড়ক আইন ২০১৮ অনুযায়ী প্রত্যেক মোটরযান নিবন্ধন বাধ্যতামূলক; তাছাড়া নিবন্ধন ব্যতীত মোটরসাইকেল চালনা আইনত অপরাধ। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ আইন ২০১৮ এর চতুর্থ অধ্যায়ে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন আইনের ১৬ ধারায় বলা হয়েছে কোনো ব্যক্তি বা মোটরযান মালিক রেজিস্ট্রেশন সনদ ব্যতীত সড়ক, মহাসড়ক বা পাবলিক প্লেসে মোটরযান চালাইতে পারিবে না।

এই বিধান লঙ্ঘন করলে, অনধিক ৬ (ছয়) মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।



নতুন বাইক রেজিস্ট্রেশন ফি| Noton Bike Registration Fee in Bangladesh

BRTA এর ওয়েবসাইট এ গিয়ে আপনি আপনার বাইকের ওজন ও সিসি দিয়ে সাবমিট করলে দেখতে পারবেন আপনার বাইকের জন্য কত টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি দিতে হবে।


১০০ সিসি বা এর থেকে নিচে, ৯০ কেজি ওজনের বাইকগুলোর জন্য আপনাকে দশ বছরের জন্য রেজিস্ট্রেশন ফি ১২,৩৯০/- টাকা। ৯০ কেজি এর উপর ১০০ সিসি বাইকের জন্য রেজিস্ট্রেশন ফি ১৭,৩৯০/- টাকা।
১০০ এর উপরে ১৫০ সিসি এর মধ্যে ৯০ কেজি বাইকের জন্য রেজিস্ট্রেশন ফি ১৩,৭৯০/- টাকা।
১০০ এর উপরে ১৫০ পর্যন্ত সিসি বাইকের ওজন যদি ৯০ কেজি এর বেশি হয় তাহলে রেজিস্ট্রেশন ফি ১৮,৭৯০ টাকা জমা দিতে হবে।
( প্রত্যেক চার্জের সাথে ১৫% ভ্যাট প্রযোজ্য)



মনে রাখবেন: দুই মেয়াদে আপনি আপনার লাইসেন্স করতে পারবেন।



১. দুই বছরের জন্য : দুই বছরের জন্য লাইসেন্স করলে আপনাকে দুই বছর পর পর আপনার রেজিস্ট্রেশন নবায়ন করতে হবে। প্রতি দুই বছর পর আপনি শুধুমাত্র ব্যাংকে টাকা জমা দিলেই আপনার লাইসেন্স নবায়ন হয়ে যাবে। 



২. দশ বছরের জন্য : দশ বছরের জন্য রেজিস্ট্রেশন করলে, আপনাকে দশ বছর পর আপনার রেজস্ট্রেশনটি নবায়ন করতে হবে।



নোটিস: দশ বছরের লাইসেন্স এ আপনার যত খরচ হয়, দুই বছরের লাইসেন্স আপনি ৫ বার নবায়ন করলে একই পরিমাণ টাকা খরচ হয়। আমার মতে ২ বছেরের জন্য লাইসেন্স করাই ভালো; কারণ যেকোনো সময় বাইক সেল করতে পারেন তাই এত টাকা দিয়ে ১০বছরের জন্য কেনো করবেন ।



মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ফিস অনলাইনে জমার নিয়ম | new bike registration fee Online Payment

মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ফি অনলাইনে দেওয়ার জন্য আপনার মোবাইল/কম্পিউটারের যেকোন ব্রাউজারে গিয়ে টাইপ করুন https://bsp.brta.gov.bd। এরপর নিবন্ধন অপশনে গিয়ে আপনার তথ্য দিয়ে নিবন্ধন করুন। লগিন করা পর বিভিন্ন সেবার ফি অপশনে যাবেন এরপর মোটর‍যান নিবন্ধন সংক্রান্ত ফিস অপশনে ক্লিক করুন।


এরপর মোটরযানের ধরণে মোটরসাইকেল সিলেক্ট করে মোটরযানের শ্রেণীতে আপনার মোটরসাইকেল অনুযায়ী নির্বাচন করে ফি জমা করুন।


(রেজিস্ট্রেশন এর টাকা জমা দেওয়ার জন্য BRTA কিছু ব্যাংক নির্দিষ্ট করে দিয়েছে, আপনাকে রশিদে উল্লখকৃত টাকা এই ব্যাংক গুলোতে জমা দিতে হবে)



নতুন মটরযান নিবন্ধন করার জন্য আপনাকে যা যা করতে হবে

সংশ্লিষ্ট বিআরটিএ অফিসে নির্ধারিত ফরমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ মোটরযানের রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করবেন। অত:পর বিআরটিএ অফিস কর্তৃক তাঁর আবেদন ও সংযুক্ত যাচাই-বাছাই করে সঠিক পাওয়া গেলে আপনাকে প্রয়োজনীয় রেজিস্ট্রেশন ফি জমা প্রদান করতে একটি এ্যাসেসমেন্ট স্লিপ প্রদান করা হবে এবং ফি জমা প্রদানের পর আপনার গাড়িটি পরিদর্শণের জন্য বিআরটিএ অফিসে হাজির করতে হবে।

আপনার গাড়িটি পরিদর্শণ করার পর মালিকানা ও গাড়ি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য বিআরটিএ ইনফরমেশন সিস্টেমে এন্টি পর সহকারী পরিচালক(ইঞ্জি:) কর্তৃক রেজিস্টেশনের অনুমোদন প্রদান করা হবে এবং রেজিস্ট্রেশন রেজিস্ট্রেশন নম্বর উল্লেখপূর্বক একটি প্রাপ্তিস্বীকারপত্র, ফিটনেস সার্টিফিকেট ও ট্যাক্স টোকেন প্রিন্ট করে সংশ্লিস্ট কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর করে আপনাকে দিয়ে দিবে।

ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট(ডিআরসি) তৈরীর জন্য আপনাকে বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ) প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসে উপস্থিত হতে হবে; আপনার মোবাইল ফোনে এসএমএস এর মাধ্যমে অবগত করা হয়। বায়োমেট্রিক্স প্রদানের পর "ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট" গ্রহণের জন্যও আপনাকে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। তারিখে বিআরটিএ অফিসে গিয়ে আপনার গাড়ির স্মার্ট কার্ড নিয়ে আসতে পারবেন।



নতুন গাড়ি রেজিস্টেশন করার শর্তাবলী

১ । মালিক ও আমদানিকারক/ডিলার কর্তৃক যথাযথভাবে পূরণ ও স্বাক্ষর করে নির্ধারিত আবেদনপত্র (New Motor Vehicle Registration Form.pdf)
একাধিক ব্যক্তি যৌথভাবে গাড়ির মালিক হলে সে-ক্ষেত্রে - একজনের নামে রেজিস্ট্রেশনের জন্য সকলের সম্মতি সম্বলিত হলফনামা।
- প্রতিষ্ঠান/ কোম্পানির হলে স্বাক্ষর ও সিলমোহর।
- ব্যাংক অথবা অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠানের সাথে গাড়ির মালিকানার আর্থিক সংশ্লিষ্টতার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্যাডেরেজিস্ট্রেশন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন।

২ । বিল অব এন্ট্রি,ইনভয়েস ও বিল অব লেডিং এবং এলসিএ কপি।

৩ । সেল সার্টিফিকেট/ সেল ইন্টিমেশন/বিক্রয় প্রমাণপত্র।

৪ । প্যাকিং লিস্ট, ডেলিভারী চালান ও গেইট পাশ (সিকেডি গাড়ির ক্ষেত্রে);

৫ । TIN সার্টিফিকেট এবং অগ্রিম/অনুমিত আয়কর প্রদানের প্রমাণপত্র।

৬ । বিদেশি নাগরিকের নামে রেজিস্ট্রেশন/মালিকানা বদলি হলে বাংলাদেশের ওয়ার্ক পারমিট এবং ভিসার মেয়াদের কপি লাগবে।

৭ । (ক) মূসক-১ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), (খ) মূসক-১১(ক)/ ভ্যাট(গ) ভ্যাট পরিশোধের চালান(প্রযোজ্য ক্ষেত্রে )

৮ । প্রস্ত্ততকারক/বিআরটিএ কর্তৃক অনুমোদিত বডি ও আসন ব্যবস্থার স্পেসিফিকেশন সম্বলিত ড্রইং (বাস, ট্রাক, হিউম্যান হলার, ডেলিভারী ভ্যান, অটো টেম্পু ইত্যাদি মোটরযানের জন্য প্রযোজ্য)

৯ । সিকেডি মোটরযানের ক্ষেত্রে BRTA’র টাইপ অনুমোদন ও অনুমোদিত সংযোজনী তালিকা।

১০। বডি ভ্যাট ও ভ্যাট পরিশোধের রসিদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)

১১। প্রযোজ্য রেজিস্ট্রেশন ফি জমাদানের রসিদ থাকতে হবে।

১২। কাস্টমস্ কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ছাড়পত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রের জন্য);

১৩। ব্যক্তি মালিকানাধীন আবেদনকারীর ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র/পাসপোর্ট/টেলিফোন বিল/বিদ্যুৎ বিল ইত্যাদির যেকোনটির সত্যায়িত ফটোকপি এবং মালিক প্রতিষ্ঠান হলে প্রতিষ্ঠানের প্যাডে চিঠি প্রযোজ্য।

১৪। নিলামে ক্রয়কৃত প্রতিরক্ষা বিভাগের গাড়ির ক্ষেত্রে লগবুকে বর্ণিত প্রস্ত্ততকাল ও প্রস্ত্ততকারকের বিস্তারিত বিবরণ সম্বলিত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদত্ত ছাড়পত্র প্রযোজ্য।

১৫। নিলামে ক্রয়কৃত সরকারি/ আধাসরকারি/স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের গাড়ি হলে নিলাম সংক্রান্ত কাগজপত্র এবং মেরামতের বিস্তারিত বিবরণ।

১৬। বিকন্ডিশন্ড মোটরযান রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত অতিরিক্ত কাগজপত্র প্রয়োজন হবে-
ক) ‘টিও’ ফরম (ক্রেতা কর্তৃক স্বাক্ষরিত), ‘টিটিও’ ফরম ও বিক্রয় রসিদ (আমদানিকারক কর্তৃক স্বাক্ষরিত হতে হবে)

খ) ডি-রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটের মূল কপি এবং ডি-রেজিস্ট্রেশনের ইংরেজি অনুবাদের সত্যায়িত কপি (সার্টিফিকেট অব ক্যানসেলেশন এর সত্যায়িত কপি থাকবে)
গ) এক কপিতে একাধিক গাড়ির বর্ণনা থাকলে মূলকপি প্রদর্শনপূর্বক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ/বিভাগ কর্তৃক সত্যায়িত কপি দাখিল করতে হবে।


১৭। মোটরযান পরিদর্শক কর্তৃক গাড়িটির পরিদর্শন প্রতিবেদন লাগবে।



নতুন মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম

মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশনের প্রথম ধাপে যে শোরুম কিংবা ডিলার থেকে যখন নতুন মোটরসাইকেল কিনবেন সাথে সাথে আপনাকে একটি মানি রিসিট, এবং একটি ডেলিভারি চালান শোরুম থেকে দিবে। ডেলিভারী চালানে গাড়ির বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া থাকে।


প্রথমদিন হয়তো আপনাকে মানি রিসিট, এবং একটি ডেলিভারি চালান এই দুইটি ডকুমেন্টস দিয়েই মোটরসাইকেল ডেলিভারি দিবে। আপনি যখন শোরুম বা ডিলারকে আপনার মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন এর ফাইল রেডি করতে বলে আসবেন তখন তারা ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে একটি ফাইল প্রস্তুত করে আপনাকে দিবে। সে ফাইলে রেজিস্ট্রেশন এপ্লিকেশন ফর্ম, আপনার তথ্য, সেলস ইনভয়েজ, কর চালানপত্র, চালান ফরম, গেট পাস, প্যাকিং লিস্ট, শুল্ক রিসিট, অঙ্গীকারনামাসহ মোট প্রায় ২৫ পৃষ্টার একটি ফাইল থাকবে।


ফাইলটি পাওয়ার পর আপনার প্রথম কাজ হচ্ছে গাড়ির জন্য BRTA কতৃপক্ষের নিকট টাকা জমা দেওয়া। অনলাইনে কিংবা ব্যাংকে গিয়ে আপনি মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ফিস জমা দিতে পারবেন। ব্যাংকে টাকা জমা দিতে যাওয়া রীতিমত হয়রানীর ব্যাপার তাই, অনলাইনে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ফিস জমা দিন।



শেষ কথা:  যদি কোম্পানির বাইক রেজিস্ট্রেশন করতে চান তাহলে অবশ্যই কোম্পানির প্যাড  আপনার নামের অথরাইজেশন লেটার লাগবে, সকল কাজের জন্য অবশ্যই নিয়ে যাবেন (বাধ্যতামূলক)। 

সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে গেলে আপনি মাসখানেকের মধ্যে আবোরো আপনার দেওয়া মোবাইল নাম্বারে SMS পাবেন কখন আপনার গাড়ির ডিজিটাল নাম্বার প্লেট ও ডিজিটাল নাম্বার প্লেট দেওয়া হবে। নির্ধারিত দিনে গিয়ে আপনার নাম্বার প্লেট এবং কার্ড বুঝে নিন; এখন আপনার মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন।
Previous Post Next Post

Contact Form