ওয়েব ডেভেলপমেন্ট A টু Z গাইডলাইন | Web Development Guidelines Bangla A to Z | techshohag.com

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট A টু Z গাইডলাইন | Web Development Guidelines Bangla


Web ডেভেলপমেন্ট A টু Z Guidline | Web Development Guidelines Bangla

আপনি কি একজন ওয়েবডেভেলপার হতে চান ? অনেকে ভেবে থাকেন ওয়েব ডেভেলপার হওয়ার জন্য কম্পিউটার ইঞ্জিয়ারিং লাইনে পড়াশোনা করতে হবে কিন্তু এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। ওয়েব ডেভেলপার হওয়ার জন্য কি করা প্রয়োজন ও ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার জন্য আপনাকে কোন ভাষাগুলো শিখতে হবে তার কমপ্লিট গাইডলাইন নিয়ে আজকে আলোচনা করা হবে।


এছাড়া আপনি জানতে পারবেন ওয়েব ডেভেলপারদের আয় কেমন ইত্যাদি বিষয়গুলো বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করা হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে ভালো মানের আইটি ফার্ম রয়েছে যেখান থেকে আপনি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কাজ শিখে নিতে পারেন। এছাড়া আপনি যদি মোটামুটি ইংরেজি পাড়েন তাহলে অনলাইনে বিভিন্ন বিদেশি ট্রেনিং সেন্টার থেকে শিখে নিতে পারবেন।





ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কি? কিভাবে শিখবেন A টুZ গাইডলাইন !

আপনি যদি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কাজ শিখে ফ্রিল্যান্সিং করে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করা যায় প্রতি মাসে। ইউটিউবে প্রবেশ করেন তাহলে সেখান হাজার হাজার টিউটোরিয়াল পাবেন যেগুলো দিয়ে ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন কাজ শেখা সম্ভব। কিন্তু আপনার জন্য ভালো হবে যদি প্রিমিয়াম কোর্স কমপ্লিট করতে পারেন।  চলুন আমরা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কে জেনে নেই।





ওয়েব ডেভেলপার কি করে থাকে?

একজন ওয়েব ডেভেলপার সাধারণত ওয়েব অ্যাপ বা ওয়েবসাইট তৈরি করে থাকে। আপনি অনলাইনে যত ধরনের ওয়েবসাইট ভিজিট করছেন সেগুলো এক একটি ওয়েব অ্যাপ বা ওয়েবসাইট যেমনঃ প্রথমআলো ডটকম, ফেইসবুক ডটকম, ইউটিউব ডটকম ইত্যাদি।


একটি ওয়েবসাইট বা অ্যাপের মূলত দুটি অংশ থাকে
  •   ডিজাইন 
  •  ডেভেলপমেন্ট।

 ব্যবহারকারীরা সাধারণত ডিজাইনটা দেখতে পারে কিন্তু ডেভেলপমেন্ট দেখতে পারে না সবচেয়ে কমন একটি উদাহরণ হচ্ছে ইউটিউব। আপনি ইউটিউবে ভিজিট করে ভিডিওর নিচে দেখবেন সেখানে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার ও সাবস্ক্রাইব বাটন রয়েছে আর সেগুলোর স্টাইল হচ্ছে ওয়েব ডিজাইন।


কিন্তু আপনি একটি বিষয়লক্ষ্য করে দেখবেন সেখানে ভিডিওর নিচে লাইক বাটনটিতে ক্লিক করলে বা কোনো কমেন্ট করলে সেখানে নাম্বার কাউন্ট করে, কয়টা লাইক বা কমেন্ট হয়েছে ইত্যাদি আর এটাই হচ্ছে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট।


আপনি যখন ভিডিওর নিচে লাইক বাটনটিতে হিট করছেন তখন এই লাইকটা ইউটিউবের ডাটাবেজে গিয়ে সেভ হচ্ছে। ডাটাবেজ মানে হচ্ছে মেমোরি কার্ডের মতো মেমোরি কার্ডে আপনার যেমনঃ গান, ছবি ইত্যাদি সেভ করে রাখতে পারেন ঠিক তেমনই ভাবে ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট গুলো ডাটাবেজে গিয়ে সেভ হয়ে থাকে।




ওয়েব ডেভেলপার কত প্রকার হয়?

সাধারণত ৩ প্রকারের ওয়েব ডেভেলপার রয়েছে যথা-

  •  ফ্রন্টইন্ড ডেভেলপার (Front End Developer)
  •  ব্যাকইন্ড ডেভেলপার (Back End Developer)
  •  ফুলস্ট্যাক ডেভেলপার ( Full-Stack Developer ).




১। ফ্রন্ট ইন্ড ডেভেলপার

একজন ফ্রন্ট End ডেভেলপার মূলত ডিজাইনার। তারা অ্যাপ বা ওয়েবসাইট ডিজাইন করে থাকে ফটোশপ, ইলাস্ট্রেটর বা স্কাচ অ্যাপ ব্যবহার করার মাধ্যমে এবং সে ডিজাইনকে তারা HTML, CSS-And-Javascript-কোড দিয়ে একটি স্ট্যাটিক অ্যাপে পরিণত করে যেটা ফাংশনাল না।




২। ব্যাক ইন্ড ডেভেলপার

একজন ব্যবহারকারীকে স্ট্যাটিক ওয়েবসাইট পরিবর্তন করতে তাঁর আর কোডিং সম্পর্কে জ্ঞান থাকার প্রয়োজন হয় না। একজন ব্যাক ইন্ড ডেভেলপারের ফ্রন্ট ইন্ড ডেভেলপার সম্পর্কে জ্ঞ্যান থাকতে হয়। কিন্তু ব্যাক ইন্ড ডেভেলপাররা সাধারণত ডিজাইনের পার্টটা করে না।


তারা ফ্রন্ট ইন্ড ডেভেলপারের কাছ থেকে স্ট্যাটিক কোডগুলো নিয়ে সেটাকে ডায়ানামিক করে অর্থাৎ একটা ওয়ার্কিং ওয়েবসাইট বা অ্যাপে পরিণত করে যেটার একটা অ্যাডমিন পেনেল থাকে। যেখান থেকে একটি ওয়েবসাইটের যাবতীয় সমস্ত কনটেন্ট পরিবর্তন করা যায় বা নতুন কনটেন্ট যুক্ত করা যায়।
এর জন্য ব্যাক ইন্ড ডেভেলপারের কাজ হচ্ছে ফ্রন্ট end ডেভেলপাররে স্ট্যাটিক অ্যাপটিকে নিয়ে সম্পূর্ণ ফাংশনাল করে তোলা।




৩। ফুল স্ট্যাক ডেভেলপার

যেখানে একজন ফ্রন্ট ইন্ড ডেভেলপারের কাজ হচ্ছে শুধুমাত্র ওয়েবসাইটের ডিজাইন করে কোডিং এ কনভার্ট করা।একজন full স্ট্যাক ডেভেলপারকে মূলত সবদিকে দক্ষ হতে হয়। তারা ডিজাইনও করে থাকে ডেভেলপমেন্টও করে থাকে। অর্থাৎ একটা অ্যাপ বা ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যত কাজ করতে হয় সবকিছু সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে।


 এবং ব্যাক ইন্ড ডেভেলপার সেই ডিজাইনারের কাছ থেকে কোডগুলো সংগ্রহ করে ডায়নামিক বা একটি ওয়ার্কিং সাইটে পরিণত করে। কিন্তু ফুল স্ট্যাক ডেভেলপার হচ্ছে একজন অলরাউন্ডার যে সবদিকে দক্ষ। সে একজন ডিজাইনার ও এর পাশাপাশি একজন ডেভেলপারও।


এখন আপনার মাথায় প্রশ্ন আসতে পারে আমি ফ্রন্ট ইন্ড ডেভেলপার ও ব্যাক ইন্ড ডেভেলপার না হয়ে সরাসরি ফুল স্ট্যাক ডেভেলপার হব। অবশ্যই! আপনি ফুল স্ট্যাক ওয়েব ডেভেলপার হওয়ার চেষ্টা করবেন। কিন্তু সবকিছু একা করতে গেলে অনেক সময় লেগে যেতে পারে, ডিজাইন করা, ডেভেলপমেন্ট করা ও এর পাশাপাশি কিছু Software Control ইত্যাদি।


একটি প্রজেক্ট কমপ্লিট করতেই প্রচুর সময় লেগে যাবে। এর জন্য ডেভেলপাররা দল বেঁধে কাজ করে তারা একটি প্রজেক্টের কাজগুলো ভাগ করে নেয়। এর মাধ্যমে আপনি বেশি কাজের অর্ডার পাবেন এবং সময় কম খরচ হবে।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার জন্য বিভিন্ন ভাষা
একজন ওয়েব ডেভেলপারের বিভিন্ন ভাষা শেখার প্রয়োজন হয়। তাহলে চলুন জেনে নেই ওয়েব ডেভেলপার হওয়ার জন্য কোন প্রোগ্রামিং ভাষাগুলো আপনার শিখতে হবে। তার আগে আপনি একটি কথা মনে রাখবেন যেকোনো ওয়েবসাইট বা অ্যাপ তৈরি করা হয় কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ভাষা দ্বারা।



আপনি মোবাইলে বা কম্পিউটারে যত অ্যাপ দেখতে পাচ্ছেন এবং যে ওয়েবসাইটে আর্টিকেলটি পড়ছেন এগুলো সবকিছুই তৈরি করা হয়েছে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ভাষা দিয়ে।
শুরুতেই আপনাকে HTML-ল্যাংগুয়েজটি শিখতে হবে। এটা একটি মার্কআপ ল্যাংগুয়েজ এবং এটা দিয়ে ওয়েবপেজের বিভিন্ন সেকশন মার্ক করা হয় যেমনঃ হেডার, ফুটার ও সাইডবার ইত্যাদি। এই ল্যাংগুয়েজটি আপনি শিখবেন একটা ওয়েব পেজের বিভিন্ন অংশকে ভাগ করার জন্য।


পরবর্তি ভাষাটি হচ্ছে CSSHTML-দিয়ে আপনি যে অংশগুলো মার্ক করেছেন সেগুলোকে ডিজাইন বা আকর্ষনীয় করার জন্য CSS-ব্যবহার করতে হবে। তাই আপনাকে HTML-এরপর-CSS-শিখতে হবে।
HTML-ও CSS-এর পরেই আপনাকে শিখতে হবে Javascript & Jquery। এটা দিয়ে একটা ওয়েবসাইটকে ইন্টারেকটিভ করা হয় যেমনঃ ফেসবুক। ফেসবুকে আপনি যখন পোস্ট করেন সেই পোস্টে কেউ লাইক করলে বা কমেন্ট করলে আপনার কাছে একটা নোটিফিকেশন চলে আসে। এইযে নোটিফিকেশনটা আসছে এইটাই হচ্ছে ইন্টারেকটিভ যেটা জাভাস্ক্রিপ্ট ও জেকুয়েরি দিয়ে করা হয়।


আপনি যখন একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন এবং বিভিন্ন অ্যানিমেশন বা স্লাইড যুক্ত করবেন তখন Javascript & Jquery-দিয়ে এই কাজগুলো করতে হয়। তাই এ দুটি ভাষা আপনাকে ভালো ভাবে শিখতে হবে।



এরপর যে বিষয়টি শিখতে হবে সেটা হলো Responsive Design Fundamentals। একটি ওয়েবসাইটে ভিজিটররা বিভিন্ন ডিভাইস দিয়ে ভিজিট করে থাকে যেমনঃ ল্যাপটপ, ট্যাবলেট ও স্মার্টফোন। তাই ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলো যেন সব ডিভাইসে সুন্দরভাবে দেখায় এর জন্য রেস্পন্সিভ করতে হবে। এর পাশাপাশি আপনাকে আরো একটি বিষয় শিখতে হবে সেটা হচ্ছে Bootstrap। এটা অনেক জনপ্রিয় একটি Front End Framework।


বিভিন্ন ক্লায়েন্ট এবং কোম্পানিরা এই ফ্রেমওয়ার্কটি ব্যবহার করার জন্য রিকুমেন্ট করে তাদের প্রজেক্টের জন্য। এর জন্য আপনাকে এই ফ্রেমওয়ার্কটিও শিখতে হবে। এগুলো শেখার পর আপনাকে একটি Server-Side Scripting Languages-শিখতে হবে। যেটার মাধ্যমে আপনার তৈরি করা ওয়েবসাইট ডায়নামিক ও ফাংশনাল করা যাবে।
অনেকগুলো সার্ভার সাইড স্ক্রিটিং ল্যাংগুয়েজ আছে যেমনঃ PHP, RUBY, PYTHON, NODE JS ইত্যাদি।



 আপনি যেকোনো একটি ভাষা শেখার চেষ্টা করবেন কারণ সবগুলো একসাথে শিখতে গেলে আপনার কোনোটাই শেখা হবে না।

আমি যেমনঃ PHP-ভাষাটি পারি PHP-দিয়ে বিশ্বের অনেক বড় বড় ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে যেমনঃ Yahoo, Wikipedia, Facebook-ইত্যাদি। অন্যান্য ভাষাগুলোও জনপ্রিয় এবং অনেক বড় বড় কোম্পানি ব্যবহার করছে। এখন আপনার কাছে যে ভাষাটি পছন্দ হবে সেটাই শিখতে পারেন কোনো সমস্যা নেই।



যেকোনো একটি সার্ভার সাইড ল্যাংগুয়েজ শেখার পর আপনাকে শিখতে হবে WordPress ও Laravel। সারা বিশ্বের অনলাইন জগতে যত ওয়েবসাইট আছে তার ৩০%-৪০% ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি করা। এবং অনলাইনে যতগুলো ই-কমার্স সাইট আছে তার মাধ্যে প্রায় ৬০% ও-কমার্স দিয়ে চলছে যেটা ওয়ার্ডপ্রেসের একটি প্লাগইন। সুতরাং ওয়ার্ডপ্রেসের প্রচুর চাহিদা রয়েছে যেটার উপর অনলাইনে অনেক কাজ পাওয়া যায়।




ওয়ার্ডপ্রেসের পাশাপাশি আরেকটি জনপ্রিয় ফ্রেমওয়ার্ক হচ্ছে লারাভেল।

 সুতরাং আপনি যেকোনো একটি ফ্রেমওয়ার্ক শিখে নিতে পারেন। কিন্তু আমি আপনাকে রিকুমেন্ট করবো ওয়ার্ডপ্রেস শেখার জন্য কারণ এটার বাজার দর অনেক বেশি।



পরবর্তিতে যে বিষয়টি শিখতে হবে সেটা হচ্ছে GIT। গিট হচ্ছে একটি সফটাওয়্যার ভার্সন কনট্রোল সিস্টেম। যেকোনো সফটাওয়্যারকে নিয়মিত আপডেট করতে হয় ও ব্যবহারকারীদের আরো আগ্রহী করে তোলার জন্য GIT-শিখতে হবে। তাই আপনি গিট শিখবেন আপনার তৈরি করা অ্যাপ বা ওয়েবসাইট কনট্রোল করার জন্য।
গিট শেখার আরো একটি সুবিধা হচ্ছে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তেই আপনি থাকেন না কেন আপনি আপনার টিমের সাথে সহজেই কাজ করতে পারবেন।



আর গিট না শিখলে আপনি আপনার অফিসে বা বাসায় যেখানে বসে কাজ করছেন ওখানেই লক হয়ে যাবেন। অনেক ঝামেলা পোহাতে হবে এবং অনেক সময় নষ্ট হয়ে যাবে, যেটা গিট শিখলে আপনার অনেক সময় বেঁচে যাবে। তাই প্রোগ্রামিং করলে অবশ্যই আপনাকে গিট শিখে নিতে হবে।



এরপর যে বিষয়টি সেটা হচ্ছে UI/UX-ডিজাইন। UI/UX-মানে হচ্ছে আপনি যে ওয়েবসাইট বা অ্যাপ তৈরি করবেন সেটা ফটোশপ বা ইলাস্ট্রেটর দিয়ে ডিজাইন করতে হবে। অনেকে শুধু মাত্র UI/UX-ডিজাইন শিখে কিন্তু কোডিং শিখে না আবার অনেকে শুধু মাত্রা কোডিং শিখে কিন্তু UI/UX-শিখে না।
কিন্তু আপনি যদি একজন Dedicated Front End Developer-হতে চান তাহলে আপনাকে UI/UX-ডিজাইনও শিখতে হবে এবং এর পাশাপাশি ডিজাইনটাকে কিভাবে কোডিং এ রূপান্তর করা যায় সেটাও শিখতে হবে। এতে অন্য ডেভেলপারদের থেকে আপনার দাম থাকবে কয়েকগুণ বেশি।



আর যদি আপনি Back End Developer-হতে চান তাহলে আপনাকে UI/UX-ডিজাইন শেখার কোনো প্রয়োজন নেই। সে ক্ষেত্রে আপনাকে স্ক্রিপ্টিং ল্যাংগুয়েজের প্রতি সব থেকে বেশি নজর দিতে হবে যেমনঃPHP,RUBY,PYTHON-ইত্যাদি। কিন্তু বেসিক যে ফ্রন্ট ইন্ড ল্যাংগুয়েজ গুলো আছেHTML,CSS,javascript-এগুলোও আপনাকে সাথে জানতে হবে।



আর ফুল স্ট্যাক ডেভেলপার মানে হচ্ছে ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট সবকিছুই পারে। এর সাথে আপনি যদি বেসিক এসইও শিখে নিতে পারেন তাহলে আপনি একজন পরিপূর্ণ ওয়েব ডেভেলপার হয়ে যাবেন।
একটা ওয়েবসাইটকে গুগল র‍্যাংকিং এ নিয়ে আসার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ওয়েবসাইটের কনটেন্ট। কিন্তু এর পাশাপাশি কিভাবে ওয়েবসাইট কোডিং করা হয়েছে সেটার উপরও অনেকটা নির্ভর করে। সুতরাং আপনি যখন কোনো ক্লায়েন্টের জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করবেন অবশ্যই সেটা এসইও ফ্রেন্ডলি করতে হবে যেন গুগল র‍্যাংকিং এ আপনার ক্লায়েন্টের সাইট চলে আসে।



এর জন্য কোডিংগুলো এসইও ফ্রেন্ডলি করতে আপনাকে জ্ঞান থাকতে হবে। বিশেষ করে হেডিং ট্যাগ ও সাবহেডিং ট্যাগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ এসইও করার জন্য। ফটোশপ সম্পর্কেও আপনাকে একটা বেসিক নলেজ থাকতে হবে। বিভিন্ন ইমেজ থেকে কিভাবে কিছু অংশ আলাদা করা যায় এবং কাট ও ক্রপ করা ইত্যাদি।



আপনি ফ্রন্ট ইন্ড ডেভেলপার বা ব্যাক ইন্ড ডেভেলপার যেটাই হবেন ফটোশপ আপনাকে জেনে নিতে হবে। কারণ ডিজাইনাররা যখন কোনো ডিজাইন আপনাকে দিবে তখন সেখানে বিভিন্ন অংশ আলাদা করে নিয়ে কাজ করার প্রয়োজন হয়।




ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার সুযোগ সুবিধা

১। বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি

আপনি বিভিন্ন সফটওয়্যার কোম্পানি বা টেকনোলোজি কোম্পানি গুলোতে চাকরি করতে পারবেন একজন ওয়েব ডেভেলপার হিসাবে। সেই কোম্পানির ওয়েবসাইটগুলো আপনি ব্যবস্থাপনা করে দিবেন অথবা কোম্পানির ক্লান্টেদের জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইট তৈরি করে দিবেন।

২। ফ্রিল্যান্সিং করে আয়

কম্পিউটার প্রোগ্রামারদের অনলাইনে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এমন কোনো কোম্পানি নেই যাদের ওয়েবসাইটের প্রয়োজন হয় না, প্রায় ছোট-বড় সব ধরণের কোম্পানিরই ওয়েবসাইট বা অ্যাপের প্রয়োজন হয়। অনলাইনে তাদের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস গুলোকে প্রদর্শন করার জন্য। 


সুতরাং ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে ওয়েব ডেভেলপারদের প্রচুর ডিমান্ড। আপনি একজন ফ্রিল্যান্সার ওয়েব ডেভেলপার হিসাবেও বিভিন্ন কোম্পানিকে চাকরি করে অনলাইনে দারুন ক্যারিয়ার তৈরি করতে পারবেন।

৩। আইটি ফার্মের ব্যবসা

আপনি নিজেই একটি আইটি ফার্ম দিয়ে ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন। বর্তমানে অনেকে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কাজ শিখে আইটি ফার্ম দিয়ে মানুষকে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কাজ শেখাচ্ছে। এভাবে প্রচুর শিক্ষার্থী পাওয়া যায় ও লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করা যায়। এখন চলুন আমি আপনাকে কিছু উপায় বলে দেই যেগুলো আপনি ব্যবহার করলে সহজেই ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ক্যারিয়ার শুরু করে দিতে পারবেন।



বাংলাদেশে আমার সবচেয়ে পছন্দের দুইজন লেখক হচ্ছে ঝংকার মাহবুব এবং তামিম শাহরিয়ার সুবিন। ওনাদের প্রোগ্রামিং কিছু বই আছে যেগুলো পড়ার মাধ্যমে আপনি প্রোগ্রামিং সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান অর্জন করতে পারেন।



HTML, CSS, Javascript & Jquery, Bootstrap-এগুলো শেখার পরে আপনাকে স্ক্রিপটিং ল্যাংগুয়েজ শিখতে হবে যেমন- PHP, Python-ইত্যাদি। সুতরাং PHP, Python-শেখার পূর্বে আমি আপনাকে রিকুমেন্ট করব সি প্রোগ্রামিং সেখার জন্য। কারণ C Programming-হচ্ছে প্রোগ্রামিং এর মাদার ল্যাংগুয়েজ।



এটার সম্পর্কে একটা ধারণা নিতে পারলে পরবর্তিতে যেকোনো ল্যাংগুয়েজ আপনার জন্য অনেক সহজ হয়ে যাবে। তাই তামিম শাহরিয়ার সুবিনের ফ্রি সি প্রোগ্রামিং বইটা পড়তে পারেন যেটা পড়ে আমি নিজেও অনেক উপকৃত হয়েছি।
আপনার জন্য আরেকটি উপায় রয়েছে যেটা আমি অবশ্যই রিকুমেন্ট করব তবে এটার জন্য আপনাকে ইংরেজিতে কিছুটা এক্সপার্ট হতে হবে। কারণ এই প্লাটফর্মে সবকিছু ইংরেজিতে ব্যবহার করা হয়েছে। আর সেই প্লাটফর্মটির নাম হচ্ছে TeamTreeHouse। এটা খুবই অসাধারণ একটি প্লাটফর্ম যেখানে আপনি অ্যান্ড্রয়েড ডেভেলপমেন্ট, আইওএস ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট প্রায় সব বিষয়ের উপর ভিডিও কোর্স করতে পারবেন।



আপনাকে প্রতি মাসে ত্রিশ ডলারের মতো পারিশ্রমিক দেওয়া লাগতে পারে। প্লাটফর্মটিতে প্রত্যেকটা ভিডিও কোর্স ইংরেজিতে এবং টিচাররা ব্রিটিশ ইংলিশে কথা বলে থাকে। সুতরাং বাংলাদেশী বা এশিয়ানদের জন্য ব্রিটিশ বুঝাটা অনেকটা চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। যদি ইংরেজিতে আপনার কোনো সমস্যা না থাকে তাহলে আপনিTeamTreeHouse-থেকে সাবস্ক্রিপশন নিয়ে তাদের ভিডিওগুলো দেখতে পারেন।



প্রোগ্রামিং এর উপরে খুবই দারুন টিউটোরিয়াল আছে তাদের কাছে। আর যদি ইংরেজিতে আপনার সমস্যা হয় তাহলে আপনি অবশ্যই ঝংকার মাহবুব এবং তামিম শাহরিয়ার সুবিনের যে বইগুলো আছে সেগুলো পড়বেন। সেখান থেকে প্রোগ্রামিং সম্পর্কে আপনি অনেক কিছু শিখে ফেলতে পারেবন।


ওয়েব ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

1. প্রশ্ন- ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে কতদিন সময় লাগে ?

উত্তর : ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার জন্য আপনি যত সময় ব্যয় করবেন তত তাড়াতাড়ি শিখতে পারবেন। এর জন্য নির্দিষ্ট কোনো মাস বা দিন নেই।
আপনি যদি পার্ট টাইম চাকরি করার পাশাপাশি প্রতিদিন যদি ৪-৫ ঘন্টা সময় প্রোগ্রামিং ভাষা শেখার পেছনে কাজে লাগান তাহলে সম্পূর্ণ প্রোগ্রামিং শেখার জন প্রায় দুই বছরের মতো সময় লেগে যেতে পারে।




2. প্রশ্ন- প্রোগ্রামিং শেখার জন্য সিএসসি ব্যাকগ্রাউন্ডের শিক্ষার্থী হতে হয় কি না?

উত্তরঃ  না !  আপনার সিএসসি ব্যাকগ্রাউন্ডের প্রয়োজন নেই প্রোগ্রামিং শেখার জন্য। যেকোনো আইটি ফার্ম থেকে আপনি সহজেই অল্প সময়ের মধ্যে প্রোগ্রামিং শিখে নিতে পারবেন। এভাবে হাজার হাজার মানুষ প্রোগ্রামিং শিখছে সিএসসি ব্যাকগ্রাউন্ডের শিক্ষার্থী না হয়ে।




3. প্রশ্ন - ওয়েব ডেভেলপারদের বেতন কেমন হয়?

উত্তরঃ আপনি যদি সম্পূর্ণ ভাবে প্রোগ্রামিং শিখতে পারেন তাহলে আপনার টাকা আয় করা নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হবে না। আপনি যদি বাংলাদেশের কোনো প্রযুক্তি সম্পর্কিত প্রথিষ্ঠানে চাকরি করেন তাহলে প্রথমে আপনার বেতন হতে পারে প্রায় ৫০-৭০ হাজার টাকা।


আর যদি আন্তর্জাতিক কোনো প্রতিষ্ঠানে কন্ট্রাকে জব করেন তাহলে প্রায় ২-৭ হাজার ডলার পর্যন্ত ইনকাম করতে পারেন। এটা নির্দিষ্ট কোনো অংক না এটা শুধুমাত্র আপনাদের একটা ধারণা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে!





ধন্যবাদ


ওয়েব ডেভেলপমেন্ট নিয়ে শেষ কথা,
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বা প্রোগ্রামিং নিয়ে আপনার যদি কোথাও বুঝতে সমস্যা হয় তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন বা নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। আর আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে বিভিন্ন জায়গায় শেয়ার করবেন। !
Previous Post Next Post

Contact Form